অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, কাচ কিংবা ননস্টিকের ঝলমলে যুগে আবারও ফিরে আসছে পুরোনো দিনের ধাতব বাসনের ঐতিহ্য তামা ও পিতল। একসময় ঘরের হেঁশেল থেকে খাবার ঘর পর্যন্ত এসব বাসন ছাড়া কিছু ভাবাই যেত না। এখন আবারও শহর ও গ্রামের রান্নাঘরে জায়গা করে নিচ্ছে এই ধাতুর হাঁড়ি, থালা, গ্লাস। শুধু নান্দনিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, আয়ুর্বেদীয় গুণ ও শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাবই এই পুনরাগমনের নেপথ্যের বড় কারণ।
পিতলের বাসনে রান্না বা খাওয়ার উপকারিতা
পিতল আসলে এক ধরনের সংকর ধাতু। তামা ও জিঙ্ক মিশিয়ে এটি তৈরি হয়। পুষ্টিবিদদের মতে, পিতলের বাসনে রান্না করলে খাবারে এই দুটি খনিজ উপাদান মিশে যায়, যা শরীরের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। নিয়মিত পিতলের বাসন ব্যবহার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে, রক্ত পরিশোধনে এবং হাড়ের গঠন মজবুত রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। ফলে দৈনন্দিন খাবার রান্না বা পরিবেশনে পিতল হতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
তামার গ্লাসে পানি ও রান্নার উপকারিতা
তামার গ্লাসে রাতভর রাখা পানি খাওয়ার রেওয়াজ নতুন নয়। আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে, ৬-৭ ঘণ্টা তামার পাত্রে রাখা পানি প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণে সমৃদ্ধ হয়। নিয়মিত এই পানি পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়, হজমশক্তি বাড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়। রান্নার ক্ষেত্রেও তামা উপকারী। কারণ এটি বিপাকক্রিয়া সচল রাখে এবং শরীরে তামার ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।
কোনটি ব্যবহার করবেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় তামা ও পিতল দুই-ই ভালো বিকল্প। পিতল যেমন খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে সাহায্য করে, তেমনই তামা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে। তবে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে—এই ধাতব বাসনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও অক্সিডেশনমুক্ত রাখতে হবে।
শেষ কথা
আধুনিক ননস্টিক পাত্রের ঝকঝকে সুবিধার বাইরে গিয়ে পুরোনো দিনের তামা-পিতলের বাসনপত্রে ফিরে আসা শুধু ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার নয়; বরং শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্যও এক প্রাকৃতিক সুরক্ষা।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন