

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শাখা অফিসে তালা ঝুলিয়ে ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুরের পীরগাছা বাজারে অবস্থিত ওই শাখা অফিসে প্রথমে তালা দেন তারা। পরে সন্ধ্যার দিকে বাজারের একটি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলতে থাকে।
খবর পেয়ে পীরগাছা থানা পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কোম্পানিটি নানা অজুহাতে টাকা পরিশোধ করছে না। তারা দ্রুত তাদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের দাবি জানান।
এর আগে শনিবার মধ্যরাতে রংপুর জোনাল অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসের আসবাবপত্র ও দামী সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে গেলে স্থানীয় গ্রাহকদের সন্দেহ হয়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মালামাল আটক করেন এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহির জন্য অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রোববার সকাল থেকেই পীরগাছা শাখা অফিসে গ্রাহকদের ভিড় বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে দুপুরে তারা অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ওই সময় অফিসে উপস্থিত ছিলেন শুধু একজন পিয়ন, ফজলুল হক। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা তাকে একরকম অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সন্ধ্যার দিকে তারা শাখার সামনে সড়কে ড্রাম ফেলে অবরোধ করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল মণ্ডল, ভবন মালিক আমিনুল ইসলাম রঞ্জু ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পুলিশ শাখা ইনচার্জের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে আলোচনার আশ্বাস দিলে গ্রাহকেরা অবরোধ তুলে নেন।
বিক্ষুব্ধ গ্রাহক বিপ্লব হাসান বলেন, ‘৫-৬ বছর ধরে এই অফিসে ঘুরছি। প্রতিবারই আজ-কাল বলে ঘুরাচ্ছে।’
আরেক গ্রাহক রুবেল মিয়া বলেন, ‘আমি ২৪ হাজার ৯০০ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু টাকা তুলতে গেলে বলে নতুন করে একাউন্ট খুলতে হবে—সবই ভণ্ডামি।’
রাজকুমার রাজ জানান, তার ১২ বছরের বীমা। ৫৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে মাত্র ২৪ হাজার। আসল টাকাটাই দেয়নি।
এ বিষয়ে শাখা ম্যানেজার শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
পীরগাছা থানার এসআই শফিকুল ইসলাম আকন্দ কালবেলাকে বলেন, ‘গ্রাহকদের পলিসির মেয়াদ শেষ হলেও প্রতিষ্ঠানটি টাকা দিতে টালবাহানা করছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা অফিসে তালা দেন। লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।’
মন্তব্য করুন