

মানিকগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমন্বয় সভায় ছাত্রলীগ ও জামায়াতের লোক। এমন অভিযোগে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ওমর ফারুক এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তারঞ্চল) সারজিস আলমের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে উঠে সারজিস তাকে শান্ত করেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের সিটি ড্রিম কনভেনশন হলে এনসিপির সমন্বয় সভায় এই ঘটনা ঘটে।
সভা শেষে ওমর ফারুক জেলার এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এরা দালাল, ছাত্রলীগ ও জামায়াতের সঙ্গে জড়িত। এ কথার পরে সভায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ সময় সারজিস আলম তাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রেস কনফারেন্স শেষে এ বিষয়ে কথা বলবেন। একথা শোনার পরও ওমর ফারুক আরও মন্তব্য করলে সারজিস আলম চেয়ার থেকে উঠে তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে তাকে মঞ্চের পাশে নিয়ে বুঝিয়ে চেয়ারে বসিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, যারা আগামী বাংলাদেশে জুলাই সনদের প্রতিটি সংস্কারের বাস্তবায়নে কাজ করবেন। যারা শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবেন। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী অবস্থান যাদের থাকবে তাদের সঙ্গে নির্বাচনে যেতে পারি।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আমাদের শাপলা না পাওয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি দেখাতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন যদি তাদের মনমতো স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে এনসিপিকে শাপলা না দেয়। আমরা মনে করি, ওই স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন আগামী বাংলাদেশের সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না। তার ওপর এই বাংলাদেশের জনগণের আস্থা থাকবে না। এনসিপিরও বিন্দুমাত্র আস্থা থাকবে না। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করেই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।
সারজিস আলম বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে এনসিপির কোনো সমস্যা নেই। ফ্রেরুয়ারিতে নির্বাচন হলেও এনসিপির কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তার পূর্বে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো যেটুকু না করলেই নয় যেমন, জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়া, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রদান করা, দৃশ্যমান বিচারিক প্রক্রিয়া একটা বড় অংশ যেন কার্যক্রম আমরা দেখতে পারি। এই বিষয়গুলো দেখানো। এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন স্বাধীনতা সক্রিয় বজায় রেখে নিরপেক্ষ থাকবে এটুকু যদি তারা প্রমাণ করতে পারেন দেখাতে পারেন তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এনসিপির কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এর কোনো কাজ না করে অন্তর্বর্তী সরকার শুধু নির্বাচনভিত্তিক পরিকল্পনা করেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখবে না।
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি বলেন, যেদিন জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত করা হবে এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হবে সে সময় যে কোনো দিন আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে পারি।
সারজিস আলম শাপলা প্রতীক নিয়ে বলেন, শাপলা পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই। আমরা অবশ্যই শাপলা পাব। তারা যদি আমাদের যৌক্তিক দাবি অন্তর্ভুক্ত করতে স্বেচ্ছাচারিতা করেন তাহলে আমাদেরও রাজপথ বেছে নিতে হবে।
মন্তব্য করুন