

আওয়ামী লীগ নেত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত ছাড়াই শফি সুমন ও সাকিব আসলাম নামে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজে নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। তাদের দাবি, কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি চরম আঘাত এবং আইনের অপব্যবহার।
শফি সুমন দৈনিক সকালের সময় ও সাকিব আসলাম বাংলাদেশ বুলেটিনের সাংবাদিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশুলিয়া থানা পুলিশ বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নাসরিন আক্তারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত সপ্তাহে শফি সুমন ও সাকিব আসলাম নামে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই কিংবা প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই মামলাটি গ্রহণ করা হয়।
এ ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া অঞ্চলের সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো বলছে, কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়া একটি ভয়াবহ নজির তৈরি করেছে। তাদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তাকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
আশুলিয়া প্রিন্ট মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা, দৈনিক ইনকিলাবের সাভার উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক রাউফুর রহমান পরাগ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, তদন্ত ছাড়া সাংবাদিকদের নামে মামলা নেওয়া পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অন্যায় পদক্ষেপ। এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। আমরা আশা করছি, প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে ২১১ ধারায় দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অন্যদিকে স্থানীয় সাংবাদিকদের একাংশ বলছেন, এটি রাজনৈতিক প্রভাবে নেওয়া একটি তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত। তারা দাবি করেছেন, অভিযুক্ত দুই সাংবাদিক দীর্ঘদিন ধরে সততার সঙ্গে কাজ করছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে হয়রানি করা হচ্ছে।
সাংবাদিক শিফাত মাহমুদ ফাহিম বলেন, একজন আওয়ামী লীগ নেত্রীর মৌখিক অভিযোগেই পুলিশ যদি তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিকদের নামে মামলা নেয়, তাহলে আইনের শাসন কোথায়? আমরা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত ছাড়া এ ধরনের মামলা গ্রহণ গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করবে। তাই দ্রুত ন্যায়বিচার ও সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আশুলিয়া থানার ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, তদন্ত ছাড়া মামলা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। আমরা এখনো তদন্ত করছি। যদি মিথ্যা অভিযোগ হয়ে থাকে তাহলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন