বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সন্তানের জন্মে ব্যতিক্রমী উদ্‌যাপন

কন্যা সন্তানের জন্মকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছের চারা উপহার দিয়েছেন মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও সাথী রানী ব্রহ্ম। ছবি : কালবেলা
কন্যা সন্তানের জন্মকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছের চারা উপহার দিয়েছেন মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও সাথী রানী ব্রহ্ম। ছবি : কালবেলা

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় নিজের কন্যা সন্তানের জন্মকে স্বাগত জানিয়ে গ্রামজুড়ে বাড়ি বাড়ি বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছের চারা উপহার দিয়েছেন মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও সাথী রানী ব্রহ্ম নামের এক দম্পতি।

শুক্র (৭ নভেম্বর) ও শনিবার (৮ নভেম্বর) দুদিনে উপজেলার কালশিরা গ্রামের ২০০-এরও বেশি পরিবারের মাঝে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, বেল, কদবেল, কালোজাম, সফেদা ও আপেলকুলসহ নানা জাতের ফলের চারা বিতরণ করেন তারা।

সন্তানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলার কালশিরা গ্রামের মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও তার স্ত্রী সাথী রানী ব্রহ্ম।

চলতি বছরের ২০ মে এ দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় এক কন্যা সন্তান। নাম রাখা হয়- সম্প্রীতি ব্রহ্ম মৌলী। নবজন্মের আনন্দকে শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজ ও প্রকৃতির সঙ্গে ভাগাভাগি করতেই এ উদ্যোগ নেন তারা।

মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, সম্প্রীতি ব্রহ্ম মৌলীর জন্মের পর আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেই— গ্রামে আমাদের মেয়ে বড় হবে, সেই গ্রামের পরিবেশ যেন আরও সবুজ ও নির্মল হয়। গাছগুলো যেমন আমাদের মেয়ের সঙ্গে বড় হবে, তেমনি একদিন ফলে ফলে ভরে উঠবে পুরো গ্রাম। আমরা চাই, মেয়ের জন্ম আনন্দ শুধু আমাদের নয়, সমাজ ও প্রকৃতিরও হোক।

সাথী রানী ব্রহ্ম বলেন,এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটু একটু করে টাকা জমিয়েছি। সন্তানের জন্মের পর আত্মীয়-স্বজনদের দেওয়া উপহারের টাকাও যুক্ত করেছি। সেই টাকা দিয়েই গাছের চারা কিনে বিতরণ করেছি।

কালশিরা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা নারদ রায় বলেন, মেয়ের জন্ম উপলক্ষে গাছ বিতরণের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এতে গ্রামের পরিবেশ সমৃদ্ধ হবে, আর শিশুর জন্মের আনন্দ সমাজের সঙ্গে ভাগ হলো। সবাই যদি এমনভাবে ভাবত, দেশ অনেক ভালো থাকত।

২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর চিতলমারী সদর ইউনিয়নের কালশিরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাখন লাল ব্রহ্মণের ছেলে মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম ও রায়গ্রামের অমল ঢালীর মেয়ে সাথী ঢালীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিজেদের বউভাতের খরচ বাঁচিয়ে এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সহস্রাধিক বই বিতরণ করেছিলেন এ দম্পতি। এছাড়া তারা বাড়িতে একটি গ্রামীণ লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন এবং বই পড়ায় তরুণদের উৎসাহিত করে আসছেন।

মাধব চন্দ্র ব্রহ্ম গত পাঁচ বছর ধরে (২০২০ সাল থেকে) স্থানীয় চারটি গ্রাম— কালশিরা, রুইয়াকুল, শ্রীরামপুর ও বেন্নাবাড়িতে— যে কোনো পরিবারের নবজাতক জন্মালে সেখানে গাছের চারা উপহার দিয়ে আসছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘মুলা তোলার আগেই সব শেষ, জমিতে পানি আর পানি’

অবশেষে থামল বায়ার্ন

আইফোন ১৮ প্রো সিরিজের তথ্য ফাঁস, যেসব পরিবর্তন আনছে অ্যাপল

মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতা নয়, প্রতিভা-মেধা বিকাশের প্ল্যাটফর্ম

দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার আসনে প্রার্থী দেব না : নুর

তারেক রহমানের সঙ্গে জুলাই শহীদ পরিবারের সাক্ষাৎ, বিএনপির সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয়

কাজাখস্তান তো ইসরায়েলের ‘ব্যবহৃত মাল’ : ফিলিস্তিনি নেতা

বগুড়ায় যাচ্ছেন মীর স্নিগ্ধ

সামিরা-ডনের ফাঁসি চেয়ে কাশিমপুরে স্লোগানে উত্তাল

আদিবাসীদের নবান্ন উৎসব / রাজশাহীতে ওয়ানগালা ও লবান উৎসব উদযাপন

১০

বিএনপিই পারবে সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দিতে : দুলু

১১

সরাইল-আশুগঞ্জের মানুষ ধানের শীষ ছাড়া কিছুই বোঝে না : রুমিন ফারহানা

১২

দুএকটি দল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে : নীরব

১৩

আন্দোলনরত শিক্ষকদের পাশে থাকার ঘোষণা হাসনাতের

১৪

‘বাকসু’ নাম নিয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের টানাটানি

১৫

সংস্কৃতি মানুষকে সভ্য করে : কাদের গনি চৌধুরী

১৬

শেষ মুহূর্তের গোলে হার থেকে বাঁচল ম্যানইউ

১৭

সন্তানের জন্মে ব্যতিক্রমী উদ্‌যাপন

১৮

আফগানিস্তান-পাকিস্তান শান্তি আলোচনা সমঝোতা ছাড়াই শেষ

১৯

কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি / সবার আগে তীরে পৌঁছে গেলেন ১৮ বছরের তরুণ রাব্বি

২০
X