রাঙ্গামাটিতে কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বেড়েছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। এতে জেলার লংগদু, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়চার ও সদর উপজেলার নিন্মাঞ্চল হ্রদের পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার।
এদিকে পানি বাড়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ গবাদি পশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে।
জানা গেছে, পানিবন্দি এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সংকট নিরসনে প্রশাসন পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানা যায়, জেলায় ৪টি উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের জন্য ১৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এদিকে ৪ উপজেলার ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি ওঠায়, শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাত হোসেন।
তবে উপজেলাগুলোতে স্থানীয় ভাবে খবর নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়গুলোতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা স্থগিত করা না হলেও সেখানে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশ না থাকা ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসার পথ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় সেখানে কোনো শিক্ষাকার্যক্রম চলছে না। এ ছাড়া বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
অন্যদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাপ্তাই বাধের ১৬টি জলকপাট আড়াই ফুট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে অপসারণ করা হচ্ছে ৪০ হাজার কিউসেক পানি। এ ছাড়াও বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে আরও প্রায় ২৫ হাজার কিউসেক পানি অপসরণ হচ্ছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে মোট ৬৫ হাজার কিউসেক পানি অপসারণ হচ্ছে। বর্তমানে হ্রদে পানি রয়েছে ১০৮ দশমিক ৪৮ এমএসএল।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, জেলার সবচেয়ে বেশি পানবন্দি অবস্থায় রয়েছে বাঘাইছড়িতে। সব নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ত্রাণ সহায়তা এবং আশ্রয়কেন্দ্র খোলার জন্য। প্রতি সেকেন্ডে মোট ৪৩ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হলেও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার পানি বেশি ছাড়া হলে ভাটির অঞ্চলে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে। সব কিছু বিবেচনা করে পানি ছাড়া অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন