বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। বিশ্ব বিবেক, বিশ্বের সব প্রতিষ্ঠান যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা বাংলাদেশের ওপর কঠিন এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে।’
তিনি বলেন, ’এই যে সভা সমাবেশ বন্ধ করার প্রক্রিয়া, মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আছেন সবকিছুই ডকুমেন্টেড এবং নামসহ রেকর্ড হচ্ছে, কেউ বাদ যাবেন না। শুধু বিদেশিদের নিষেধাজ্ঞা নয়, বাংলাদেশের মানুষের নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন।’
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আমিনবাজারে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আগামী নির্বাচনে চুরি করার পথে হাত বাড়ালে কেউ রেহাই পাবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বারবার বলা হচ্ছে, এই ভোট চুরির সঙ্গে যারা সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবেন, যারা দেখেও না দেখার ভান করছেন তারাও বাদ যাবেন না। সবার বুকেই ধড়ফড় ধড়ফড় শুরু হয়ে গেছে। বাইরে দেখান খুব সাহসী, কিন্তু ভেতরে এত সাহস নেই।’ তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটনে জাতিসংঘের সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। বিশ্বের সব নেতারা বাড়ি চলে গেছেন, কিন্তু আমাদের অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বসে রয়েছেন। অবস্থা বুঝতে পারছেন, কতটা খারাপ। কত খারাপ অবস্থা বুঝতে পারছেন, সেলফি তুলেও এখন কোনো কাজ হচ্ছে না। সেলফি তুলে কতদিন একটু ফুরফুরা মেজাজে ছিলেন, তারপর দেখা গেল স্যাংশন। আওয়ামী লীগ যে ভুয়া, সারা বিশ্ব বুঝে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, পদত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য, অংশীদারত্বমূলক নির্বাচন হতে হবে। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার এবং সংসদ হবে, যারা জনগণের কাছে দায়ী থাকবে, তাদের জবাবদিহি থাকবে। এর আগে কারও কোনো রক্ষা নেই।’
আমীর খসরু বলেন বলেন, ‘এখন আরও সমস্যা হচ্ছে, ক্ষমতা তো যাবেই, এই যে লাখ লাখ কোটি টাকা চুরি করেছেন, এগুলোর কী হবে। এক লাখ কোটি টাকার উপরে শুধু বিদেশে পাচার করেছেন। এর মধ্যে আমেরিকাতে সবচেয়ে বেশি টাকা পাচার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভিসা নীতির কারণে অনেকে মুখ খুলছেন না, কিন্তু হৃদয় তাদের ফেটে যাচ্ছে। কেউ বাদ যাবেন না, এমনকি বিচারকরাও বাদ যাবেন না। বাংলাদেশের ভিসানীতিতে বিচারকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গণমাধ্যমও এর বাইরে নেই। একদিকে বিশ্ব বিবেক, আরেক দিকে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারবে না।’
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশরাফের সভাপতিত্বে ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বিএনপির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ঢাকা বিভাগ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল সালাম আজাদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোসহ সংগঠনের বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন