নড়াইলের লোহাগড়ায় মধুমতী নদীভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তীরে বসবাস করা মানুষ। গত কয়েকদিনের ভাঙনে নদীতে বিলীন উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের পার আমডাঙ্গা ও লোহাগড়া ইউনিয়নের ছাগলছেড়া গ্রামের ৩০০ পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি।
রোববার (১ অক্টোবর) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এই ভাঙনের দৃশ্যপট।
এলাকাবাসী জানায়, তারা ৪ বছর ধরে মধুমতী নদীর ভাঙন কবলে পড়ছে এই এলাকার মানুষ। বিগত দিনে কিছু সহোযোগিতা পেলেও এ বছরে নতুন করে এখনো কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পায়নি তারা।
তারা আরও জানায়, ইতিমধ্যে প্রায় ৩০০ পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া দুই গ্রামের এখনো প্রায় ৬০০ পরিবার নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই ভাঙন পায় ২ কিলোমিটার বিস্তৃত।
পার আমডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর সবুর খান, নুর আলম মাস্টার, সোহাগ মাস্টার, ও জাহেদা বেগম, রাসেল মোল্যা, রাজীব মুন্সি জানায়, তাদের গ্রামের শতবর্ষের মসজিদ-মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি ও হাজার একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সম্বল হারিয়ে দিশেহারা তারা। সরকারি ও স্থানীয়ভাবে কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা আসেনি এখনও।
এ সময় এলাকাবাসী সরকারের কাছে দ্রুত নদীভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবিও জানান।
লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৮২ জনকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক নদীভাঙন রোধে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে আমরা কয়েকবার ভাঙনকবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেছি।
এ ব্যাপারে নড়াইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন জানান, ২০২০/২১ অর্থবছরে নদীভাঙন রোধে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু সেটিও এখন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পুনরায় নদীভাঙন রোধে কাজ করা হবে।
এদিকে নদীভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক।
মন্তব্য করুন