গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাঙালগাছ এলাকায় দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের দাবি, পাওনা টাকার বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় তারা নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, নিহতদের নামে ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। কী কারণে, কারা তাদের হত্যা করেছে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার মহিষকুরা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৩২) ও তার ভাই মো. শুক্কুর আলী (২৫)। তারা গাজীপুর মহানগরীর বাঙালগাছ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
নিহতের স্বজনরা জানায়, শফিকুল ইসলাম বলাকা বাসের হেলপার ও শুকুর আলী অটোরিকশা চালাতেন। বিকেলে বাসা থেকে তারা বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে বাঙালগাছ এলাকায় পাওনা টাকার বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। একপর্যায়ে তাদের মারধরে ঘটনাস্থলে শফিকুল ও তার ভাই শুকুর আলী নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচার দাবি করেন নিহতদের স্বজনরা।
এ ব্যাপারে নিহত শফিকুলের স্ত্রী সুমাইয়া বলেন, ‘আমার স্বামী শফিকুল ইসলাম বলাকা বাসের হেলপার ছিল। বিকেলে বাসা থেকে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান তিনি। রাসেল নামে একজন এসে খবর দেয় আমার স্বামী মারামারি করতাছে। খবর পেয়ে এসে দেখি আমার স্বামী ও দেবরকে মেরে ফেলেছে। আমার স্বামীর সঙ্গে কাঠের দোকানদার হিমেল ও তার ভাই সুমনের টাকা-পয়সা নিয়ে ঝামেলা ছিল। কয়দিন আগে তাদের সঙ্গে মারামারি করছে।’
মারধরে দুই ভাই নিহতের খবরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ। সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। আলামত সংগ্রহসহ ঘটনা তদন্তে কাজ করছে পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই।
সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ। সেখান থেকে দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।’
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, ‘নিহতদের নামে ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। কয়েকদিন আগে তারা জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আর্থিক লেনদেন নাকি পূর্ব বিরোধের জের ধরে এই জোড়া হত্যাকাণ্ড তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের গ্রেপ্তারসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, প্রকাশ্য রাস্তায় একসঙ্গে দুই ভাই নিহতের খবরে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালের মর্গে ভিড় করছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
মন্তব্য করুন