বর্তমানে দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় রাষ্ট্রোদ্রোহ ও নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিয়মিত আটক করা হচ্ছে জামায়াত ও বিএনপির সমর্থকদের। এ ছাড়া নিয়মিত মামলার আসামি আটক হচ্ছে। তবে আটকের তুলনায় জামিন না হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে বর্তমানে ৭৮৫ জন কারাবন্দি রয়েছে, যার মধ্যে পুরুষ রয়েছে ৭৫২ জন ও মহিলা রয়েছে ৩৩ জন। তবে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারটিতে ৪০০ জন কারাবন্দির ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। যেখানে পুরুষ কারাবন্দির ধারণ ক্ষমতা ৩৬০ ও মহিলা বন্দিদের জন্য রয়েছে ৪০টি সিট।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পাওয়া এই কারাগারটিতে বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ কারাবন্দি থাকায় কারাগারে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও খাবারের কোনো সংকট নেই। তবে বাথরুম, গোসল, ঘুমানোসহ নানা ধরনের সমস্যায় রয়েছে কারাবন্দিরা। আলাপচারিতাকালে এসব কথা বলেন সাতক্ষীরার জেল সুপার মো. আবুল বাসার।
তিনি বলেন, ১০.৫ একর জায়গার উপরে বিস্তৃত সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে কারারক্ষী রয়েছে ৬৬ জন। এখানে ৪০০ কারাবন্দির ধারণ ক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে ৭৮৫ জন কারাবন্দি আছে। ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ কারাবন্দি হওয়ায় বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বন্দিদের। গাদাগাদি করে ঘুমানো, বাথরুম ব্যবহার , গোসলসহ বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখিন হতে হয় কারাবন্দিদের। তবে তাদের খাবারের কোনো সংকট নেই কারণ কারাগারে থাকা মোট বন্দির সংখ্যানুযায়ী খাবার প্রদান করা হয়। কারাগারটি নতুন হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো নতুন ভবন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি।
কারাগারে বন্দিদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারাগারে বন্দিদের জন্য বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকার অনুমোদ রয়েছে, বন্দিরা সে পত্রিকাগুলো নিয়মিত পড়ার সুযোগ পায়। তাছাড়া টিভি দেখার অনুমোদন থাকলেও পর্যাপ্ত টিভি নেই, তবে মহিলাদের জন্য প্রযোজন মতো টিভি রয়েছে। পাশাপাশি কারাগারে একটি লাইব্রেরি রয়েছে যেখানে ১ হাজার বই রয়েছে। যে বইগুলো বন্দিরা নিয়মিত পড়ার সুযোগ পায়। একই সাথে অন্যান্য কারাগারের মতো এখানেও বন্দিরা প্রতি ১৫ দিনে একবার ৫ মিনিট করে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। আগে কারাগারে তাঁতসহ নানা ধরনের কাজের মাধ্যমে অর্থ উর্পাজনের সুযোগ থাকলেও সেটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে একটি জেন্টস পার্লার করার পরিকল্পনা রয়েছে , এবিষয়ে ইতোমধ্য কারা মহাপরিদর্শকের কাছে অনুমোদনের জন্য লিখিত চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে বন্দিরা কাজ শিখে সেখান থেকে রোজ প্রায় হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। তাছাড়া কারাগার থেকে বের হয়ে তারা স্বাবলম্বী হতো পারবেন। এদিকে, মহিলা বন্দিদের সাথে থাকা তাদের বাচ্চারা বন্দিদের মতো সমপরিমাণ খাবার পায় তবে বাচ্ছাদের জন্য রোজ অন্য খাবারে সাথে অতিরিক্ত একটি ডিম দেওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা জজ র্কোটের অতিরিক্ত পিপি আব্দুল লতিফ বলেন, বিচারধীন মামলার ক্ষেত্রে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে তারপরে সেটার বিচার র্কায হয়ে থাকে। যারা নাশকতা করে বা আগুনসন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত তাদের জামিনের সংখ্যা কম। একই অপরাধে অনেকে বারবার জেলে যায়। এটা হলো অভ্যাসগত অপরাধ। এমন অপরাধের বিষয়টি বিবেচনা করে আইন তাদের জন্য সৌচ্ছার এবং তাদের হাজতবাসটি সেভাবে হয়। তাই তাদের বিচারকার্যে সময় বেশি লাগে। তাছাড়া, শান্ত সাতক্ষীরাকে যারা অশান্ত কারার চেষ্টা করবে আইন তাদের জন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন