বিএনপির ডাকা গত দুই দিনের অবরোধে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকা পড়া দুই শতাধিক ট্রাক ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে এসব ট্রাক ছেড়ে যায়।
এদিকে অবরোধে ট্রাক সংকটে পড়েন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। ভারত, ভুটান, নেপাল থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের মালামাল ট্রাকের অভাবে পড়ে থাকে বন্দরে। এসব আজ ট্রাকে লোড করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনটি দিয়ে পাথর আমদানি হয়। কয়েক দফার অবরোধ, ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা আমদানি কম করায় এবং এ শুল্ক স্টেশন দিয়ে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ না থাকায় রাজস্ব আয় কমে গেছে। ভুট্টা, গম, ডলোচুন, ভুসি, খৈল, পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ভারত থেকে আগের মতো আসছে ট্রাক। কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে না পারায় বেশির ভাগ মালামাল বিভিন্ন গুদামে রাখা হয়।
বুড়িমারী স্থলবন্দরে কাস্টমস্ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ারডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট সভাপতি আবু সাইদ বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর প্রাণচঞ্চল ছিল। হঠাৎ করে অবরোধের কারণে ঢাকা, পাবনা, বিভিন্ন রুটের ট্রাক চলাচল করছে না। এর ফলে আমদানিকারকরা আসতে না পাড়ায় ব্যবসার নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ট্রাক ভাড়া বেশি। দূরপাল্লার কোনো ট্রাক যেতে চাচ্ছে না।’
বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিনের অবরোধে বুড়িমারী স্থলবন্দরের অনেক শ্রমিক কাজ না পেয়ে বাড়িতে বসে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দেশের অবরোধ মানে শ্রমিকদের কষ্ট।’
ট্রাকচালক বাবলু মিয়া বলেন, ‘অবরোধের কারণে কোনো ভাড়া পাইনি। প্রায় ১০ দিন ধরে গাড়ি বসা। এই অবরোধে গাড়ি বের করতে সাহস পাই না। সব মিলে আমরা ট্রাকচালকরা খুব কষ্টে আছি।’
তবে বুড়িমারী স্থলবন্দরের ডেপুটি কমিশনার আব্দুল আলিম বলেন, ‘বুড়িমারী স্থল বন্দরের চলতি বছরের অক্টোবরে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ কোটি ১ লাখ টাকা। চলতি ১ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। অবরোধের প্রভাব ও রাজস্ব আয় কমার বিষয়টি এখনো আমরা বুঝতে পারিনি।’
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘চলমান অবরোধে বুড়িমারী স্থলবন্দরে এখন পর্যন্ত কোনো প্রভাব পড়েনি। স্থলবন্দরের সব কিছু সচল করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা আমরা করছি।’
মন্তব্য করুন