রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘গর্ভফুল’ রেখেই সেলাই করলেন চিকিৎসক

ভুক্তভোগী নারী রিতা আক্তার বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি : কালবেলা
ভুক্তভোগী নারী রিতা আক্তার বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি : কালবেলা

রাজশাহীতে প্রসূতির পেটে গর্ভফুল (প্লাসেন্টা) রেখেই সেলাই করার অভিযোগ উঠেছে মেরিনা আক্তার নামে এক গাইনি বিশেষজ্ঞের বিরুদ্ধে। সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে এসে ভুল চিকিৎসায় ওই প্রসূতির জীবন এখন সংকটের মুখে।

অভিযুক্ত ডা. মেরিনা আক্তার নওগাঁ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক। সেলাই কাটার পর ওই রোগীর অবস্থার অবণতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরণের নির্দেশ দেন ডা. মেরিনা।

প্রসূতি মায়ের ছোট ভাই আব্দুল জব্বার বলেন, পুঠিয়া উপজেলার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বেসরকারি রায়হানা ক্লিনিকে গত ২ নভেম্বর তার বোন মোছা. রিতা সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি হন। ডা. মেরিনা আক্তার তার সিজার করেন। সিজারের পর রিতা ও তার নবজাতক শিশু বাড়ি ফিরে যান। এর কিছুদিন পর রিতার সিজারের সেলাই কাটা হয়। সেলাই কাটার পর একদিকে যেমন তার রক্তপাত বন্ধ হচ্ছি না, তেমনি চরম পেটব্যাথা অনুভব করছিলেন। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে ১২ নভেম্বর রিতার পরিবার তাকে আবারও ওই রায়হানা ক্লিনিকে ডা. মেরিনা আক্তারের কাছে নিয়ে যান। ডাক্তার তার অবস্থার অবনতি দেখে দ্রুত রামেক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।

ওইদিনই (১২ নভেম্বর) রামেক হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানকার ডাক্তার তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলেন। সিল্কসিটি ডায়াগনিস্টক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর ডাক্তার জানান, রিতার পেটে গর্ভফুল অপসারণ করা হয়নি।

রামেক হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি রিতা বলেন, আমি ভুল চিকিৎসার শিকার। আমি এর বিচার চাই। চিকিৎসায় পঞ্চাশ হাজারের বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে এখনও আমি সুস্থ হয়ে উঠতে পারিনি। আমি আমার নবজাতককে এখন পর্যন্ত কোলে তুলে আদর করতে বা বুকের দুধ খাওয়াতে পারছি না। আমি চাই না অন্য কারও সাথে এমন হোক।

এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের গাইনি ইউনিট প্রধান ডা. নাহিদ সুলতানা বলেন, রিতার পেটে জমাট রক্ত রয়েছে। এটা এমন কিছু না। চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মেরিনা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফুল পেটের মধ্যে থাকলেও ভয়ের কোনো কারণ নেই। তিনি আরও বলেন, একজন প্রসূতি মায়ের সিজারের পর তার ফুল কোনো কারণে ভেতরে থেকে যেতে পারে। ওই মুহূর্তে জোর করে ওই ফুল বের করতে গেলেই বরং রোগীর আরও খারাপ অবস্থা হতে পারে। ফুল পরবর্তীতে শরীরের সাথে এবজর্ব (মিশে যায়) হয়ে যায়। এটা ভয়ের কোনো বিষয় নয়। যদি সমস্যা হয় তবে চিকিৎসা আছে, ওষুধ আছে।

তিনি আরও বলেন, সিজারের পর সেলাই কাটার পর দ্বিতীয় দফায় যখন ওই রোগী আমার কাছে আসে তখন তার শরীরে রক্তস্বল্পতা ছিল। আমি তার অবস্থা দেখে তার ভালোর জন্য রামেক হাসপাতালের ইমরাজেন্সিতে ভর্তির পরামর্শ দেই। তা না হলে গ্রাম থেকে গিয়ে শহর থেকে রক্ত নিয়ে আবার যাতায়াতে যে সময় নষ্ট হতো তাতে রোগীর আরও বেশি ক্ষতি হতে পারত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন কোচ নিয়োগ দিল ঢাকা ক্যাপিটালস

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বিদেশ নিতে দেরি হচ্ছে : ডা. জাহিদ

খালেদা জিয়াকে নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান ডা. জাহিদের

অপু-সজলের ‘দুর্বার’

বাংলাদেশে আমরা ভিন্নমতকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই : উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে: জয়শঙ্কর

ঢাকাবাসী জাপান ওয়ার্ল্ডের উদ্যোগে রাজধানীতে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা

খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে ডা. জুবাইদা

মেঘনা ব্যাংকের এমডি হলেন সৈয়দ মিজানুর রহমান 

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

১০

বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল

১১

নদীতে ডুবে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

১২

নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত

১৩

শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, অভিযুক্তকে যে শাস্তি দিল এলাকাবাসী

১৪

কার্টনের ভেতর পলিথিনে মোড়ানো খণ্ডিত পা

১৫

‘আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে এক টাকা খরচ করব না’

১৬

ফিশিং বোটে মিলল ৩৭৫ বস্তা সিমেন্ট, গন্তব্য ছিল মিয়ানমার

১৭

ছাত্রদলের দুই নেতাকে শোকজ 

১৮

ফুটবল ও ক্রিকেট, দুই বিশ্বকাপেই খেলবে যেসব দেশ

১৯

চুল পড়া আর খুশকির সমস্যা বাড়াচ্ছেন নিজের ৬ অভ্যাসে

২০
X