উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কমলা ও মাল্টা চাষে ফলন ভালো, লাখপতি হওয়ার স্বপ্ন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে নিজের ফল বাগানে মাঈদুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা
কুড়িগ্রামের উলিপুরে নিজের ফল বাগানে মাঈদুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিভিন্ন জাতের কমলা ও মাল্টার ভালো ফলন পেয়েছেন মাঈদুল ইসলাম যুবরাজ। এতে এ মৌসুমে লক্ষাধিক টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। যুবরাজ উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রাজারাম গ্রামের আব্দুল আজিজ মিয়ার ছেলে। বর্তমানে ৪০ শতক জমিতে দুই শতাধিক কমলা ও মাল্টা গাছ লাগিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন বাহারী রংয়ের কমলা ও মাল্টা ঝুলছে তার গাছে। চারা লাগানোর মাত্র তিন বছরের মাথায় গাছে কমলা আসতে শুরু করে। তার বাগানের বয়স পাঁচ বছর।

গত বছর থেকে তিনি বাণিজ্যিকভাবে কমলা ও মাল্টা বাজারজাত শুরু করেন। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই বাগান থেকে প্রায় ২০-২৫ মণ কমলা ও মাল্টা বিক্রি করার আশা করছেন তিনি। যা বর্তমান কমলার বাজার মূল্যে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। ফলে উৎপাদন ব্যয় বাদে দ্বিগুণ লাভ হবে বলে জানিয়েছেন এ ফলচাষি।

মাঈদুল ইসলাম একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি বাবার জমিতে সমন্বিত ফলের চাষ শুরু করেন। প্রায় এক একর জমিতে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানান জাতের ফলের গাছ। আম, মাল্টা, আঙুর, লটকন, পেয়ারা, ড্রাগন ও আজোয়া খেজুর চাষের পাশাপাশি কমলা চাষের উদ্যোগও নেন তিনি।

প্রথমে ঝিনাইদহ শহর থেকে ৩০টি চায়না ঝুড়ি কমলা জাতের গাছ সংগ্রহ করেন তিনি। পর্যাক্রমে ভারত থেকে বিভিন্ন জাতের কমলা ও মাল্টার চারা সংগ্রহ করে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ টি চারা রোপণ করেছেন। এ ছাড়া সংগ্রহকৃত গাছ থেকে কলম পদ্ধতি ব্যবহার করে ১০ শতক জমিতে ২ হাজার কমলা ও মাল্টা গাছের কলম চারা রোপণ করেন। কলমকৃত গাছের চারা কয়েক দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু হবে।

এদিকে প্রথম দিকে রোপণ করা কমলা ও মাল্টা গাছের মধ্যে প্রায় সব গাছ থেকে কমলা ও মাল্টা পেতে শুরু করেছেন। বর্তমানে তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ ও আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কমলা বাগানে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। সময়মতো জৈব সার, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে ব্যবহার করে কমলাগাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সঠিক পরিচর্যায় যা প্রতি বছর দ্বিগুণ ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মাঈদুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি চাকরি শিক্ষকতার পাশাপাশি আমি কৃষিতে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এ পথ বেছে নেই। কমলা চাষের পাশাপাশি বাগানে বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ আছে। তবে বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় কমলা চাষের আগ্রহ বেড়ে গেছে। আমার জমিতে চায়না ঝুড়ি কমলা ও মাল্টা জাতের দুই শতাধিক গাছ রয়েছে। এটি মিষ্টি জাতের কমলা ও মাল্টা। খেতে অনেক সুস্বাদু। বর্তমান বাগানের বয়স পাঁচ বছর। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ছয় লাখ টাকা খরচ করেছি। গত বছর এ বাগান থেকে আয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আশা করছি, এ বছর কমলা বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা আয় হবে। আগামী বছর দ্বিগুণ টাকা লাভের আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের মানুষের কমলা ও মাল্টার চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যদি দেশের মধ্যে কমলা ও মাল্টার বাণিজ্যিক চাষ করা যায় তাহলে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাইরের দেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

উক্ত কমলা ও মাল্টর বাগান দেখতে আসা আনিছুর রহমান, লেয়াকত আলী, দুলু মিয়া ও ইসলামসহ আরও কয়েকজন বলেন, যুবরাজের কমলা-মাল্টার বাগান দেখে খুবই ভালো লেগেছে তাদের। যারা বেসরকারি চাকরি করেন বা কৃষিকাজ করেন তার পাশাপাশি ফল কৃষিতে মনোযোগ দিলে ভালো আয় করা সম্ভব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন বলেন, কমলা ও মাল্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষ উপজেলায় কৃষিক্ষেত্রে নতুন এক সম্ভাবনা তৈরি করেছে। যুবরাজের কমলা ও মাল্টার বাগান আমাদের কৃষি অফিস থেকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়মিত দেখাশোনা করছেন। তাকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই, পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি অফিসের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশের ৩ অঞ্চলে হিট ওয়েভের শঙ্কা

ঢাকাস্থ গণচীনের দূতাবাসের প্রতিনিধিদলের ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

চট্টগ্রামে হাতকড়া পরে ফিরল সাবেক এমপি ফজলে করিম

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রতিরোধে একমত যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স

প্রধান উপদেষ্টার / সহকারী প্রেস সচিব হলেন দুই তরুণ সাংবাদিক

শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব, শিক্ষাব্যবস্থায় অচলাবস্তা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ধূম্রজাল

গণপিটুনির ঘটনায় / জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তারেক রহমান

বিশেষ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার দাবি লায়ন ফারুকের

১০

জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা, এক সমন্বয়ককে অব্যাহতি

১১

ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের

১২

মাদারীপুরে কৃষককে পিটিয়ে হত্যায় মানববন্ধন

১৩

জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের টাওয়ার পদ্মায় বিলীন

১৪

দীঘিনালায় দুপক্ষের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

১৫

তিন মাস ধরে ১৪০০ চা শ্রমিকের মজুরি বন্ধ

১৬

নীতিমালার খসড়া অনুমোদন / সম্পদের হিসাব দিতে হবে উপদেষ্টাদেরও

১৭

জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের টাওয়ার পদ্মায় বিলীন

১৮

বিটকয়েনে বার্গারের দাম পরিশোধ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

১৯

ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৭

২০
X