তপশিল ঘোষণার মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘণ্টা বাজার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসনে শুরু হয় আলোচনা। ভোটযুদ্ধে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী আলোচিত শামীম ওসমানের প্রতিপক্ষ কে হবেন, তা জানতে কৌতূহলী হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয়রা। টক্কর হবে সেয়ানে সেয়ানে, এমনটাই ভেবেছিলেন ভোটাররা। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় আসনটিতে ভোটের লড়াই হয়ে গেছে একপেশে। শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সহজ জয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শামীম ওসমান হ্যাটট্রিক করবেন এমন প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় একাধিক নেতা জানান, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানা নিয়ে ঘটিত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন। শিল্পনগরী হওয়ায় আসনটিতে বহিরাগত ভোটার সংখ্যা অনেক। যারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। এমনকি কোনো দলের সমর্থকও না। ফলে এসব ভোট কার ভাগ্যে জোটে তা নির্ণয় করা কঠিন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে সম্ভাব্য ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৯৪ হাজার ২০৭ জন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগের দূর্গ বলে পরিচিত সিদ্ধিরগঞ্জে ভোটার সংখ্যা ২ লাখের কিছু বেশি। অনেক ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ফতুল্লায় শক্তিশালী অবস্থান বিএনপির। ফলে আসনটিতে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে লড়াই হয় হাড্ডাহাড্ডি। বর্তমানে আসনটিতে বিএনপি ছাড়া আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মতো জনসক্ষমতা অন্য কোনো দলের নেই।
জেলা নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, আসনটিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১ জন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের শামীম ওসমান, জাতীয় পার্টির আলহাজ ছালাহ্ উদ্দিন খোকা মোল্লা, তৃণমূল বিএনপির অ্যাডভোকেট আলী হোসাইন, জাকের পার্টির মো. মুরাদ হোসেন জামাল, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. সেলিম প্রধান, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. হাবিবুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. শহীদ উন নবী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের গোলাম মোর্শেদ রনি, সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মো. সৈয়দ হোসেন, স্বতন্ত্র মো. রাশেদুল ইসলাম ও কাজী দেলোয়ার হোসেন।
নির্বাচন বিষয়ে কথা হলে নূরুল আজিজ নামের এক ভোটার বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে যেসব প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে শামীম ওসমান ছাড়া অন্য কাউকে চিনি না। কোনো দিন দেখি নাই। ভোটের মাঠে তারা কেমন সারা পাবে তা বলা কঠিন। তবে নৌকা মার্কাকে মোকাবিলা করার মতো জনসমর্থন তাদের নেই। তাই আওয়ামী লীগের শামীম ওসমান আবার এমপি হবেন বলেই মনে হচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবা উচিত নয়। নির্বাচনে সব প্রার্থী জয়ের আশা করেন। এ আসনে শামীম ওসমানের বিকল্প নেই। তাই আমাদের দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমরা সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি। ভোটারদের যে মনোভাব লক্ষ করছি, তাতে নৌকায় ভোট দিতে তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করছি, শামীম ওসমান আবার এমপি নির্বাচিত হবেন।
মন্তব্য করুন