বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২
মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

মহাজনের ফাঁদে নিঃস্ব মেহেরপুরের শতাধিক পরিবার

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের সুদ কারবারি মনিরুজ্জামান অটোল। ছবি : কালবেলা
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের সুদ কারবারি মনিরুজ্জামান অটোল। ছবি : কালবেলা

ব্যাংক নয় মহাজনি সুদের ফাঁদে পড়ে নিঃশ্ব হচ্ছে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের শত শত পরিবার। ভুক্তভোগীদের অনেকেই এখন ঘুরছেন আদালতের বারান্দায়, কেউ আবার সব হারিয়ে বাড়িছাড়া। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সুদ কারবারিদের নানা প্রলোভনে পড়ে সুদের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছেন তারা। এদিকে পুলিশের অভিযানে সুদ কারবারিদের কয়েকজন ধরা পড়লেও থেমে নেই তাদের দৌরাত্ম্য।

ভুক্তভোগীদের একজন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট গোলাম হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাকরি শেষে একটি ব্যবসা শুরু করেন সার্জেন্ট (অব.) গোলাম হোসেন। একসময় টাকার প্রয়োজনে ওই গ্রামের সুদ কারবারি মনিরুজ্জামান অটোলের কাছে যান তিনি। অটোলের কাছ থেকে ব্যবসার জন্য ঋণ হিসেবে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন। এ জন্য মাসে সুদ গুনতে হতো ৩০ হাজার টাকা। এভাবেই প্রতি মাসে টাকা দিলেও আসল টাকা কখনোই শোধ হয় না। পরে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে অটোল তার বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকার প্রতারণা মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সব কিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব গোলাম হোসেনের পরিবার। এভাবেই শিবপুর গ্রামের অনেকেই আজ অটোলের সুদের জালে আটকে পড়ে বাড়ি ছাড়া।

বিষয়টি নিয়ে অটোলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি ও তার ছেলে প্রতিবেদকের ওপর চড়াও হয়। তারা নিজেকে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির আস্থাভাজন বলে দাবি করে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তবে অটোলের মা তার ছেলে এক সময় সুদ কারবারির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছেন।

এ রকম আরও একজন সুদ কারবারি হলেন হান্না মন্ডল। মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা রুপালি মন্ডল তার কাছ থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। মাসে ১০ হাজার টাকা করে তিন বছর শোধ করার পরও ঋণ আর শেষ হয় না। এখন রুপালি মন্ডলের নামে ৫ লাখ টাকার প্রতারণার মামলা দেওয়া হয়েছে। হান্না মন্ডলের প্রতারণার শিকার হয়ে এখন ঘর ছাড়া চম্পা মন্ডল।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে হান্না মন্ডল জানান, ছেলে ও নাতির অসুস্থতার কথা বলে আমার কাছ থেকে দুজন বিভিন্ন সময়ে টাকা ধার নেয়। টাকা না পাওয়ায় আমি আদালতে মামলা করেছি।

পুলিশ বলছে, সুদ কারবারিদের তালিকা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী রাসেল বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। প্রত্যেকটি ইউনিয়নেই কিছু লোক সুদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইতিপূর্বে অভিযান পরিচালনা করে অনেক দলিল ও চেকসহ সুদ ব্যবসায়ীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছি। আমাদের কাছে সুদ ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা আছে। সে তালিকা ধরে আমাদের তদন্ত চলমান আছে। এ ছাড়াও আমরা গ্রামবাসীদের সচেতন করছি, কেউ যেন এ সুদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না হয়ে পড়ে এবং ভুক্তভোগীরা যেন থানায় এসে অভিযোগ করে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ

কালবেলার সংবাদের পর স্বপ্নের রঙিন ঘরে শাহারবানু

আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াত : মুজিবুর রহমান

রাজধানীতে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারের রেকর্ডেড ভিডিও প্রদর্শন

জবাব দিতে পিএসসিকে আলটিমেটাম

অসদাচরণের অভিযোগে বদলি চিকিৎসক দম্পতি

সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ

শহীদ জিয়ার মাজারে দোয়া করলেন খালেদা জিয়া

নোয়াখালী বিভাগ চাইলেন ‘কাবিলা’

বেথ মুনির রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত জয়

১০

‘বিষাক্ত মদ’ পানে সংরক্ষিত ইউপি সদস্যের স্বামীর মৃত্যু

১১

বিদায় নিচ্ছে মৌসুমি বায়ু, বৃষ্টি নিয়ে নতুন তথ্য

১২

ঢাকা উত্তর সিটিতে জন্মনিবন্ধন ছাড়াই টাইফয়েড টিকা মিলবে

১৩

শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারতে খালেদা জিয়া

১৪

জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ নারী ফুটবল দলকে গণসংবর্ধনা

১৫

দুই বছর আগের মামলায় নতুন করে ‘আসামি’ সাংবাদিক

১৬

বদলির আদেশের ৩ সপ্তাহ পরও অফিস করছেন রাসিক সচিব

১৭

অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ মারা গেছেন

১৮

চার দিন ধরে নিখোঁজ বিকাশ কর্মী ওমর ফারুক

১৯

ওসির বিরুদ্ধে দুর্বল ধারার অভিযোগ, আ.লীগ নেতার ৩ সন্তানের জামিন

২০
X