দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ-লালমাই-নাঙ্গলকোট) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সম্পদ আগের নির্বাচনের সময় থেকে কমেছে। গত পাঁচ বছরে তিনি স্ত্রী, কন্যা ও নাতি-নাতনিদের দান করায় ২৪ কোটি ১৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩০ টাকার সম্পদ কমেছে। তবে তার স্ত্রী কাশমেরী কামালের সম্পদ বেড়েছে ২১ কোটি টাকার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী হলফনামায় এমন তথ্য উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
হলফনামায় অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪১ কোটি ৯০ লাখ ৫৩ হাজার ৭১৪ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৬২ কোটি ২৭ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৮ টাকা মূল্যের সম্পদ।
অর্থমন্ত্রীর মোট বার্ষিক আয় ১ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫১৬ টাকা। তার মধ্যে কৃষি খাত থেকে তিনি বছরে আয় করেন ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় ১ লাখ ৫ হাজার ৯৪১ টাকা। ব্যাংক আমানত থেকে আয় ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬৯ টাকা। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে সম্মানী ও ভাতা হিসেবে পান ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বছরে মোট করযোগ্য আয় ৪১ লাখ ৪০ হাজার ৭১০ টাকা। জমি বিক্রি থেকে করমুক্ত ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮২ টাকা।
অর্থমন্ত্রীর নগদ টাকা আছে ২৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫০৯ টাকা। মন্ত্রীর স্ত্রীর নামে আছে ১ কোটি ৭২ লাখ ৪৯ হাজার ১ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২৪ হাজার ৬৪৪ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে আছে ৬২ লাখ ৯৭ হাজার ৬২৭ টাকা। বন্ড ঋণপত্র স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে মন্ত্রীর বার্ষিক আয় ৫ কোটি ৪৪ লাখ ২ হাজার ১৫৩ টাকা। এ খাতে স্ত্রীর আছে ১১ কোটি ৪২হাজার ১৩ টাকা।
পোস্টাল সেভিংসহ বিভিন্ন আমানতে মন্ত্রীর বিনিয়োগ ৬ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৬০০ টাকা। একই খাতে তার স্ত্রীর আছে ২৫ কোটি ৫১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৫ টাকা। বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি আছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার ৭১৮ টাকার। এ খাতে স্ত্রীর আছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকার মূল্যের সম্পদ। মন্ত্রীর নিজের কোনো স্বর্ণ নেই। তবে স্ত্রীর উপহার বাবদ স্বর্ণ আছে ৫৬ তোলা এবং ব্যক্তিগত আছে ২০ তোলা। ইলেকট্রনিকসামগ্রী আছে আড়াই লাখ টাকার, স্ত্রীর নামে আছে দুই লাখ টাকা।
আসবাবপত্রের বিবরণী মূল্যে মন্ত্রীর নামে ৬ লাখ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। মন্ত্রীর ব্যবসার পুঁজি মূলধনের জের ৯১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫০ টাকা, একই খাতে তার স্ত্রীর নামে আছে ১৩ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৪০ টাকা। লোটাস কামাল প্রপার্টিজ লিমিটেডে আছে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে আছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
সৌদি বাংলাদেশ কন্ট্রাক্টিভ কোম্পানি লিমিটেডে মন্ত্রীর নামে আছে ১ কোটি ৬২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯৪ টাকা। তার স্ত্রীর নামে আছে ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৩৩২ টাকা। বকেয়া বাড়ি ভাড়া সম্পদ হিসেবে আছে ২ কোটি ৩৯ লাখ ৭৯ হাজার ৩০০ টাকা। এলকে স্পিনিং মিলস লিমিটেডে ৭৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৯ টাকা, অরবিটালস এন্টারপ্রাইজে ৭ কোটি ৪২ লাখ ১৪ হাজার ৬৯০ টাকা রয়েছে মন্ত্রীর।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার হলফনামায় মোট সম্পদ উল্লেখ ছিল ৬২ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ১৫৩ টাকা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ বছরে মন্ত্রীর সম্পদ আছে ৩৮ কোটি ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৩ টাকা।
অর্থমন্ত্রীর কৃষিজমির মূল্য ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৯ টাকা। স্ত্রীর নামে ৪৫ লাখ ১২ হাজার ৪৪৮ টাকা কৃষিজমি। নিজ নামে অকৃষি জমি এক কোটি ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮০ টাকা, আর স্ত্রীর নামে ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫২ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। স্ত্রীর নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। যার মূল্য ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৮ টাকা।
অর্থমন্ত্রী দায়সমূহের মধ্যে জমি বিক্রি করে অগ্রিম টাকা নিয়েছেন ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। ঋণ আছে ১ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার ১৭০ টাকান। এ ছাড়া লোটাস কামাল স্পিনিং মিলস লিমিটেড কোম্পানিতে স্ত্রীর ঋণ আছে ৯০ লাখ টাকা। অর্থমন্ত্রীর মোট দায়ের পরিমাণ ৬ কোটি ১৭ লাখ ২৪ হাজার ১৭০ টাকা। স্ত্রীর নামে দায় আছে ১ কোটি ৭২ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৯ টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কুমিল্লা-১০ আসন থেকে টানা তিনবারসহ মোট চারবারের সংসদ সদস্য। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি পরিকল্পনামন্ত্রী, ২০১৮ সাল থেকে বর্তমানে তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আসন্ন নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ-লালমাই-নাঙ্গলকোট) আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মন্তব্য করুন