পটুয়াখালীর গলাচিপায় লোকালয় থেকে দুটি চিত্রা হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলালের নির্দেশে উপজেলার চর বিশ্বাস ইউনিয়ন থেকে অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর সহায়তায় এ হরিণ দুটি উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে চর বিশ্বাস ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তৌহিদুল গাজীর বাড়ির পাশ থেকে একটি চিত্রা হরিণ আটক করে তরমুজ ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকরা। একই সময় একই ইউনিয়নের চর আগস্তী গ্রামের সেলিম বিশ্বাসের বাড়িতে আরও একটি চিত্রা হরিণ আটক করে স্থানীয়রা।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরিণ আটকের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে বন বিভাগ ও অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে চিত্রা হরিণ দুটি উদ্ধার করে। তাদের ধারণা, পার্শ্ববর্তী চর বাংলা বন থেকে হরিণ দুটি লোকালয়ে প্রবেশ করে।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, হরিণ দুটির মধ্যে একটি আহত অবস্থায় রয়েছে। গলাচিপা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডা. ফেরদৌস ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন এবং আহত হরিণটিকে চিকিৎসা দিয়েছেন। হরিণটি সুস্থ হলে দুটিই বনে অবমুক্ত করা হবে।
এদিকে বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, চিত্রা হরিণ চিত্রল হরিণ বা চিত্র মৃগ নামেও পরিচিত। উপমহাদেশে হরিণের প্রজাতিগুলোর মধ্যে এটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। লালচে বাদামি শরীরের ওপর সাদা সাদা ফোটা গোলাকার দাগ থাকে বলে প্রজাতি চিত্রা বা চিত্রল হরিণ নামে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের সুন্দরবনই এর প্রধান আবাস। তবে দেশের চিরহরিৎ বনগুলোয় খুব অল্প সংখ্যায় এরা টিকে আছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরা মূলত গাছের ফল, পাতা, বাকল ও ঘাস খায়। হরিণের এই প্রজাতির কোনো প্রজনন মৌসুম নেই। চিত্রা হরিণের গর্ভধারণকাল ৭ মাস এবং এরা প্রতিবারে মাত্র একটি বাচ্চা প্রসব করে। ফলে বংশবৃদ্ধি খুব ধীরে হয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) চিত্রা ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ বলে তালিকাভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২-এর তফসিল-২ অনুযায়ী এই বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা, শিকার বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মন্তব্য করুন