নানা অনিয়মের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) শরিফুল ইসলাম তাজফুলের বিরুদ্ধে গত ২১ ডিসেম্বর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন ১০ সদস্য। তবে ওই চেয়ারম্যানের দাবি, অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পদত্যাগ করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব স্বাক্ষরিত বার্তায় ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামকে তাজফুলকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১৭ ডিসেম্বর চলমান প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের অনুমতি দেয় । ১৯ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ১১তম সভার আহ্বান করলে আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালীর কথা বলে সদস্যরা অনুপস্থিত থাকে। এরপর ২১ ডিসেম্বর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে ১০ সদস্য।
তবে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) মুঠোফোনে ওই চেয়ারম্যান দাবি করেন, জেলা পরিষদের দায়িত্ব পাওয়ার পর সদস্য একরামুল হক আমার কাছে কিছু অনৈতিক সুবিধা দাবি করেন। আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আমিনুল ইসলামকে দিয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ২১ ডিসেম্বর জরুরি সভা করেন। সভায় অন্য সদস্যরা বুঝে উঠার আগেই আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। যা জেলা পরিষদের আইনের পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক।
এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আমিনুল ইসলাম বলেন, সব সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেই সভা ডেকেছিলাম। সেখানে ১০ জন সদস্যের স্বাক্ষরে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।
তবে সংরক্ষিত নারী সদস্য কামরুন্নাহার আলো বলেন, সদস্য একরামুল হক মুঠোফোনে আমাকে ২১ ডিসেম্বর একটি সভায় আসতে বলেন। তবে কী কারণে ওই সভা ডাকা হচ্ছে সেটি জিজ্ঞাসা করলে একরামুল বলেন সভায় আসলেই বুঝতে পারবেন। পরে আমি সেই সভায় না যেতে পারায় আমাকে সভার কারণ না জানিয়েই রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর দিতে বললে আমি দেয়নি।
আরেক সদস্য গোলাম মোস্তাফা বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলে আমিসহ মোসলেম উদ্দিন নামে আরেক সদস্য এর বিরোধিতা করি। পরে অন্য সদস্যদের চাপাচাপিতে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করেছি। এ অনাস্থার প্রস্তাবটি মূলত স্বল্প বয়স্ক সদস্যদের ক্ষমতার প্রতিহিংসার প্রতিফলন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে অনৈতিক সুবিধা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা পরিষদের সদস্য একরামুল হক বলেন, আমরা আসলে শরিফুল ইসলাম তাজফুলের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বা সমন্বয়হীনতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে এ অনাস্থা এনেছি।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনিসুর রহমান বলেন, ১০ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। প্রস্তাবটি বিধিসম্মত কিনা তা যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন