রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে প্রথমেই তিনি নির্বাচনী এলাকার শিক্ষকদের গলায় মালা পরাবেন ইচ্ছা পোষণ করেছেন। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর বাজারে গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহিয়া মাহি এ ইচ্ছার কথা জানান। পাশাপাশি এ আসনের এমপি হলে শিক্ষকদের সম্মান দিয়ে সব সময় ‘স্যার’ ডাকার প্রতিশ্রুতিও দেন মাহি।
মাহিয়া মাহি বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আমার এলাকায় যত শিক্ষক আছেন, প্রথমেই সবার গলায় মালা পরাব। তাদের আমি সম্মান জানাব। কারণ এ এলাকার শিক্ষকেরা অনেক নির্যাতিত, অনেক অসম্মানিত। শিক্ষকদের অপমান করে সারা দেশে এ দুই উপজেলাকে অনেক ছোট করে ফেলা হয়েছে । তাই কাজটা আমি প্রথমেই করতে চাই।’
মাহি বলেন, ‘আমার আরেকটি ইচ্ছা হলো- এলাকায় রাস্তাঘাটের প্রচুর সমস্যা। বর্ষায় হাঁটুকাদা হয়ে যায় অনেক রাস্তা। রাস্তাগুলো ঠিক করব। বরেন্দ্র এলাকায় কৃষিকাজের পানির অনেক সমস্যা। সুপেয় পানির সমস্যা। সেটার সমাধান করব। সরকার যে ভাতা দেয়, তা এখানে শতভাগ হয়নি। ৪০ শতাংশ হয়েছে। যারা পেয়েছে তাদের আবার ৫-৭ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এগুলো আমি নিরসন করব। সরকার যে অনুদান দেবে, সেই আমানতটা আমি জনগণের মাঝে বিলিয়ে দেব।’
জনগণের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর কথা জানিয়ে মাহি আরও বলেন, ‘জনগণ আর জনপ্রতিনিধি- এ দুজনের মধ্যে কোনো গ্যাপ (দূরত্ব) থাকা যাবে না। জনপ্রতিনিধিকে জনগণের মধ্যে নেমে আসতে হবে। তাহলে একটা সুন্দর আসন দাঁড়াবে। আমি যখন মানুষের কাছাকাছি আসি, নারীরা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। ১৫ বছর কষ্ট পেয়েছে, তারা পরিত্রাণ চায়। তারা আমাকে আপন করে নেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি যেখানেই যাই, সবাই আমাকে বলে ভোটটা দেবে। এখন কতটুকু দেবে, আমি বিশ্বাস করি তানোর-গোদাগাড়ীর মানুষ সরল মনের মানুষ। তাদের আমি বিশ্বাস করি। প্রশাসন অনেক বেশি তৎপর। মানুষ ভোট দিতে পারবে। আমি জয়ী হব আশা করি।’
তবে রাজনীতি অনেক কঠিন জিনিস জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সিনেমার থেকেও বাস্তবের রাজনীতি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে একটা মেয়ে হিসেবে টিকে থাকাটা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। এখন বুঝতে পারছি, প্রধানমন্ত্রী কত যুদ্ধ করে এই জায়গায় টিকে আছেন। আমি তাকে অ্যাপ্রেসিয়েট (প্রশংসা) করি। রাজনীতি যতটুকু ভয়ংকর, বাস্তবে আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি জটিল। আমার স্বামী রাজনীতিবিদ, ওর জন্যই এখন পর্যন্ত টিকে আছি।’
উল্লেখ্য, রাজশাহী-১ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন টানা তিনবারের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। ২০২২ সালের জুলাইয়ে তিনি গোদাগাড়ীর একটি কলেজের অধ্যক্ষকে নিজের কার্যালয়ে বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ ওঠে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা মেলে। পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদের স্পিকারের কাছে ওই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। শিক্ষক পেটানোর এ ঘটনা দেশব্যাপী আলোড়ন তোলে।
মন্তব্য করুন