নবনির্বাচিত সাংসদ সাবেক সফল স্বাস্থ্য মন্ত্রী আন্তর্জাতিক হাড়জোড়া বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম রুহুল হককে আবারও দেশের স্বার্থে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় সাতক্ষীরাবাসী। ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলেও মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি। ফলে থমকে যায় সাতক্ষীরার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন। মন্ত্রিত্ব না থাকায় গত ১০ বছর তিনি নিজ এলাকার বাইরে খুব বেশি নজরও দিতে পারেননি। এতে করে তার হাতেই প্রতিষ্ঠিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে এক প্রকার হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করে।
তার মন্ত্রিত্বের সময়ে স্বাস্থ্যসেবায় যে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছিল তা ম্লান হয়ে গেছে গত ১০ বছরে। এসব কারণে এবার তাকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় সারাদেশের আপামর সাধারণ মানুষ। জেলারও স্বাস্থ্যসেবায় ডা. রুহুল হকের অবদান জনগণের নজর কেড়েছিল। তাই সাতক্ষীরা-৩ আসনে টানা ৪র্থ বারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য, সাবেক সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ. ফ. ম রুহুল হককে আবারও মন্ত্রী হিসেবে পেতে চায় সাতক্ষীরার ২৪ লাখ মানুষ।
ডা. রুহুল হক একজন শান্তি প্রিয় জনদরদী নেতা। তিনি সুফিসাধক খান বাহাদুর আহছান উল্লার দৌহিত্র। যে কারণে তিনি হানাহানি, বিশৃঙ্খলা পছন্দ করেন না। প্রতিহিংসার রাজনীতি ও বিরোধী দলের সমর্থকদের দমন বা হয়রানির কোনো ঘটনা তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ঘটেনি। বরং তার সময়ে নির্বাচনী এলাকার সকল মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন।
সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক কালের চিত্রের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, ‘গত ১৫ বছরে সাতক্ষীরায় যে উন্নয়ন হয়েছে তার নেপথ্যে রয়েছে ডা. রুহুল হকের অবদান। এ ছাড়া ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে গত দশ বছর যাবত তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর দেশের জন্য ও সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কোভিড-১৯ । যেখানে মন্ত্রিসভায় না থেকেও তিনি দেশের জন্য ভূমিকা রেখেছেন। শুধু তাই নয়, বর্তমানে তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন। একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়ায় তিনি মন্ত্রী হলে সাতক্ষীরাবাসীসহ দেশবাসী উপকৃত হবে। তাই তাকে মন্ত্রী হিসেবে পেতে চাই।’
এদিকে, তিনি দিন-রাত পরিশ্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এলাকার উন্নয়ন করে সর্বস্তরের জনতার দোয়ারে দোয়ারে গিয়ে উঠান বৈঠক করে সাধারণ মানুষের মন জয় করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।
সারা বিশ্বে বিশিষ্ট শৈল্য চিকিৎসক হিসেবে তার সুখ্যাতি রয়েছে। তারপরও তিনি সাতক্ষীরা সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। তিনি বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসক হওয়ায় শেখ হাসিনা তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে সারা দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করে একসাথে সারা দেশে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে স্বাস্থ্যসেবাকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। চিকিৎসকদের মান উন্নয়ন, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে আধুনিকায়নেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। যে কারণে তিনি সারা দেশের মানুষের হৃদয়ে একজন সফল মন্ত্রী হিসেবে আসন করে নেন।
সাতক্ষীরা পৌর এলাকার মিলন কুমার বিশ্বাস বলেন, ডা. আ. ফ. ম রুহুল সাহেবের কারণে আমরা স্বপ্নের মেডিকেল কলেজ পেয়েছি, বাইপাস সড়ক পেয়েছি, আধুনিক সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল পেয়েছি। সে কারণে আমাদের প্রাণের দাবি তাকে আবারও মন্ত্রীর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হোক।
সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, প্রফেসর ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শৈল্য চিকিৎসক। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। তিনি একজন সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আমরা সাতক্ষীরাবাসীর পক্ষ থেকে আবারও তাকে মন্ত্রী হিসেবে পেয়ে চাই।
আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুজিৎ মন্ডল বলেন, ডা. রুহুল হক দেশের সম্পদ। স্বাস্থ্য বিভাগ কেন পররাষ্ট্রের মত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও তিনি সামলানোর যোগ্যতা রাখেন। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিত্বের বাইরে রেখেও গত ১০ বছর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সভা সেমিনারে ডা. রুহুল হককে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠিয়েছেন।
আবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নেও তাকে গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার অভিজ্ঞতার কারণে। ফলে শুধু সাতক্ষীরার ক্ষুদ্র স্বার্থে নয় দেশের বৃহৎ স্বার্থে এবার এ মানুষটিকে মন্ত্রী করা প্রয়োজন।
এসব বিষয়ে সাতক্ষীরা-৩ থেকে চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, আমি প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছি। এ ছাড়া সংসদ সদস্য হিসেবে গত ১৫ বছর দায়িত্ব পালন করায় আমার যথেষ্ঠ কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের তিনশ সংসদ সদস্যের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রিসভা দায়িত্ব পালন করবে। কাদের নিয়ে মন্ত্রিসভা পরিচালনা করবেন এটা প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপার। তবে তিনি যদি চান আমি দায়িত্ব নিতে পারব।
মন্তব্য করুন