নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষেই প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুরের দিকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী এবং ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের পক্ষে শেখর আহমেদ নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান। এ বিদ্যালয়টি তিনটি ইউনিয়নের শেষ সিমানায় যমুনার নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় বিদ্যালয়ে তিনটি ইউনিয়ন থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎ অত্যন্ত নারী লোভী, অবৈধ ক্ষমতা বিস্তারকারী ও অর্থলোভী প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। এমনকী তিনি বেশ কয়েকবার বিচারের মুখামুখিও হয়েছেন। কিন্তু কিছু অদৃশ্য শক্তির কারণে ছাড় পেয়ে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে অনৈতিক কার্যকলাপ করেন। এ ঘটনা ঘটার পরেও ম্যানেজিং কমিটির নিকট অভিযোগ দেওয়া হলে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ম্যানেজিং কমিটিও একটি পুতুল কমিটি হিসেবে রয়েছে। যা বিগত কয়েক বছর যাবৎ অভিভাবকের আশা-আকাঙ্খার কমিটি গঠন হয় নাই। এমতাবস্থায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদের সঙ্গে সহকারী ওই শিক্ষিকার সঙ্গে অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী শেখর আহমেদ বলেন, এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসাবে এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি ওই দুই শিক্ষকের যথাযথ ব্যবস্থা চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই সহকারী শিক্ষিকা (ইংরেজি) কালবেলাকে বলেন, ‘আমি খুব ভালো মানুষ। কে বা কাহারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন।’ তবে ভিডিওর বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদের ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের জুয়েলসহ একাধিক শিক্ষক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফোনে কালবেলাকে বলেন, এই ঘটনার জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই আমরা অবশ্যই এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
বদলগাছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ই্উএনও) মো. আলপনা ইয়াসমিন ফোনে কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তদন্ত করছেন।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান ফোন কালবেলাকে বলেন, ইতোমধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন