সারা দেশে পণ্য পরিবহনে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া হয়ে পাবনার নগরবাড়ি সিরাজগঞ্জের বাঘা বাড়ি পর্যন্ত নৌপথ গুরুত্বপূর্ণ। পণ্যবাহী শত শত জাহাজ নিয়মিত এই নৌপথে চলাচল করে। কিন্তু পদ্মা নদীতে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। নদীর চ্যানেলে পানি কমে যাওয়ায় সেখানে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা থেকে ছেড়ে আসা নগরবাড়ি ও বাঘাবাড়ি বন্দরগামী সার, গম, কয়লা, ক্লিংকার, কাদামাটিসহ বিভিন্ন পণ্যবোঝাই অন্তত ১৮টি মালবাহী জাহাজ আটকা পড়ে আছে দৌলতদিয়ার পদ্মায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরি ঘাটের পাশে পদ্মা নদীতে নোঙর করে আছে এমভি গোলাম-৬, মেসার্স এম ভি এইচ নেভিগেশন, এমভি নিজামপুর, এমভি মেহেদী হাসান, এমভি রাহেম পাটোয়ারী-১, এমভি পোটন-৩, এমভি আজোয়া, এমভি ফয়সাল-৪, এমভি নাফসান-৪, প্রিন্স অফ ঈশান, এমভি হোসনেয়ারা-২, এমভি গোলাপ-২, প্রিন্স অফ ইমন দোহার ৪। এ সব কোস্টার জাহাজ থেকে শতাধিক শ্রমিকরা মালামাল নামিয়ে বাল্কহেডে বোঝাই করছেন।
আটকা পড়া জাহাজ গোলাম-৬-এর মাস্টার মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি কমে দৌলতদিয়া নগরবাড়ি বাঘাবাড়ী নৌপথে অসংখ্য ডুবোচর ও নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে নৌ চ্যানেলের মোল্লার ট্যাগ, লতিফপুর পেঁচা খোলার চর, নাকালিয়া এলাকা সবচেয়ে বেশি নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় সেখানে ১০ থেকে ১৩ ড্রাফটের মালবোঝাই কোস্টার জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। এ কারণে জাহাজের সক্ষমতা যা আছে তার চেয়ে কম মালামাল নিয়ে জাহাজ আসছে। নদীর নাব্য সংকটে অনেক পথ ঘুরে আসতে হয়; সে কারণে তেল খরচ অনেক বেশি লাগছে।
আরেক কোস্টার জাহাজের মাস্টার মো. হিটলার বলেন, নদীর নাব্য সংকটের কারণে জাহাজের যে ধারণক্ষমতা আছে সে অনুযায়ী মালামাল আনতে পারছি না। জাহাজের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে মালামাল কম আনা হচ্ছে। কারণ নদীতে ঠেকে যায় জাহাজ।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম ও মোংলা থেকে ছেড়ে যাওয়ার ১৮ দিনের মধ্যে লোড আনলোড কমপ্লিট করতে হবে। তা না হলে প্রতিদিনের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তবে এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অঞ্চলের ডেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হাসান আহমেদ বলেন, নদীতে কোনো নাব্য সংকট নেই। ফেরি চলাচলে সাড়ে ৬ ফিট থেকে ৮ ফিট পানি হলেই ফেরি স্বভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে। কিন্তু কোস্টার জাহাজ কত ফিট পানিতে চলাচল করতে পারে সেটা আমার জানা নেই।
মন্তব্য করুন