শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৩০ এএম
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

আড়তদারদের সিন্ডিকেটে লাগামহীন মাছের বাজার

ফরিদপুরের মাছের বাজার। ছবি : কালবেলা
ফরিদপুরের মাছের বাজার। ছবি : কালবেলা

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মাপাড়ের বিভিন্ন এলাকার বাজারে আকাশচুম্বী মাছের দাম। অভিযোগ, আড়তদারি সিন্ডিকেট মাছের এই দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর অপর পাড়ে চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চর মৈনট ঘাটের পাশে রয়েছে উপজেলার সবচেয়ে বড় মাছ বাজার। এই মাছ বাজারে রয়েছে অন্তত ৩০টি আড়ত। এ ছাড়া উপজেলা সদর বাজারে ৩টি মাছের আড়ত, চরহাজীগঞ্জ বাজারে ৩টি, জাকেরের সুরা নামক বাজারে ৪টি, আরজখার ডাঙ্গি গ্রামের বাজারে ৩টি, আবদুল হাই খান হাটে ৪টি, মাসুদখাঁর হাটে ৩টি ও নতুন ডাঙ্গি বাজারে রয়েছে আরও দুটিসহ প্রায় অর্ধশত আড়তদারি ব্যবসা।

উপজেলার বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি আড়তের অধীনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ডেকে আনা হয়েছে প্রয়োজনসংখ্যক জেলে। এসব জেলেকে লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে আড়তদাররা তৈরি করে দিচ্ছেন বিশাল আকৃতির বেড় জাল, কারেন্ট জাল ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। প্রতিটি আড়তের নির্দিষ্ট জেলেরা দিনরাত ৫-৭টি করে ট্রলার, কারেন্ট জাল ও বেড়জাল দিয়ে পদ্মা নদীতে মাছ শিকার করে ভোররাতে নিয়ে যায় নিজস্ব আড়তে। সেখানে আকাশচুম্বি দরে বিক্রিত মাছের ৪০ ভাগ অর্থ নেয় আড়ত মালিক এবং ৬০ ভাগ অর্থ পায় জেলেগোষ্ঠী। উপজেলার প্রতিটি মাছ বাজারের নিয়ন্ত্রণ করছে আড়তদাররা। তারা বেশি লাভবান হওয়ার জন্য সিন্ডিকেট করে চড়ামূল্যে মাছ বিক্রি করে চলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি মাছ বাজারের আড়তদাররা এলাকার প্রভাবশালী এবং রাজনৈতিক ছাত্রছায়ায় থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন আড়তদারি ব্যবসা। তারা প্রতিদিন জেলেদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিক্রিত মাছের লাখ লাখ টাকা। মাছ বাজারের আড়তদারদের দৌরাত্ম্য নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা, বাজার মনিটর কমিটির সভায় বারবার উপস্থাপন করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্টদের।

উপজেলার চর মৈনট ঘাটের আড়তদার মুরাদ হোসেন মৃধা বলেন, অত্র চরাঞ্চলে মাছের আড়তদারি ব্যবসা করতে লাইসেন্সের দরকার হয় না, তবে মাছ বাজারে নির্দিষ্ট ঘর ও লাখ লাখ টাকা খরচ করে জেলেদের নৌকা জাল দিতে হয় এবং পদ্মায় জেলেদের নিরাপত্তার বিষয়টিও আমাদের দেখতে হয়।

জেলে চিত্ত হালদার বলেন, এই বয়সে পেটের দায়ে সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে এসে আমরা সাতজন জেলে বেড়জাল দিয়ে পদ্মায় মাছ ধরি। এই শীতে রাতভর খেটে মাছ বিক্রির যে ৬০ ভাগ টাকা পাই, তা দিয়ে আমাদের খরচই ওঠে না। আড়তদারদের ৪০ ভাগ অর্থ দেওয়া ছাড়াও বাজারে আসার পর খাজনার মাছ ও ঝাড়দারের মাছ রাখার পর অবশিষ্ট মাছ ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় বলেও সে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসলে আড়তদারি ব্যবসার ওপর হস্তক্ষেপ করা আমাদের কোনো নীতিমালায় নেই। তবে অতিরিক্ত মূল্যে মাছ বিক্রি ও পদ্মায় অবৈধ জাল ব্যবহারের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান করতে পারি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়া বার সমিতির নির্বাচনে সভাপতি ও সা.সম্পাদকসহ ১০ পদে বিজয়ী বিএনপি

নারায়ণগঞ্জে কারানির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা সমাবেশে মাসুদুজ্জামান

আপনার সুস্থতায় সাহস পায় বাংলাদেশ : নাছির উদ্দীন নাছির

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে জামায়াত আমিরের উদ্বেগ

খালেদা জিয়াকে নিয়ে হাদির আবেগঘন বার্তা

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খবর নিতে মধ্যরাতে হাসপাতালে আসিফ নজরুল

জামায়াতের সাবেক আমিরের কবর জিয়ারত করলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু

খালেদা জিয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার দোয়া কামনা, তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা

নির্বাচিত হলে সব চাঁদাবাজি ও অনিয়ম দূর করব : আবদুল আউয়াল মিন্টু

আমি জনগণের শাসক নয়, সেবক হতে চাই : খন্দকার আবু আশফাক

১০

১৯ দেশের অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড আবার যাচাই করবে যুক্তরাষ্ট্র

১১

মাদক চোরাচালান চক্রের মূলহোতাসহ ২ সহযোগী গ্রেপ্তার

১২

বিএনপিতে কোনো ভেদাভেদ নেই : মিনু

১৩

গুগলকে কনটেন্ট সরাতে অনুরোধের সংখ্যা নিয়ে সরকারের ব্যাখ্যা

১৪

অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের রাজনীতি করে বিএনপি : শিমুল বিশ্বাস

১৫

বগুড়ায় খালেদা জিয়ার নির্বাচন পরিচালনায় ১১ সদস্যের কমিটি

১৬

নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশে কোনো সংস্কারই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় : ইশরাক 

১৭

আ.লীগ হিন্দু সম্প্রদায়ের আবেগ নিয়ে রাজনীতি করেছে : আমান

১৮

তারেক রহমানের নেতৃত্বে হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে : নজরুল ইসলাম

১৯

আন্দোলনরত ৮ দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত

২০
X