বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:২৪ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রেনের ধাক্কায় স্বামী-সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা উর্মি

স্বামী-সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জোনাইল গ্রামের গৃহবধূ উর্মি খাতুন। ছবি : কালবেলা
স্বামী-সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জোনাইল গ্রামের গৃহবধূ উর্মি খাতুন। ছবি : কালবেলা

মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বামী-সন্তানকে একসঙ্গে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল গ্রামের গৃহবধূ উর্মি খাতুন (২৪)। তিনি ট্রেনের ধাক্কায় নিহত গার্মেন্টস কর্মী রতন হোসেনের স্ত্রী।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আনালিয়াবাড়ি এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনায় উর্মির স্বামী রতন হোসেন (২৬) ও তাদের একমাত্র সন্তান রোহান ওরফে সানি (৪) ও বাসের অপর এক যাত্রী শরিফ মন্ডল (৪০) মারা যান।

রতন বড়াইগ্রামের জোনাইল গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। নিহত শরিফ মন্ডল রাজশাহীর বেলপুকুর থানার মাহিন্দ্রা গ্রামের আলম মন্ডলের ছেলে।

শনিবার (৩ জানুয়ারি) উর্মি খাতুন কাঁদতে কাঁদতে জানান, বাস বিকল হওয়ায় চার বছরের ছেলে সানিকে নিয়ে তারা দুজন নিচে নেমে যান। এ সময় রেললাইনের উপরে বসে বাবা ও ছেলে জিলাপি খাচ্ছিলেন। আর তিনিসহ অন্য যাত্রীরা রেললাইনে কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এরই মধ্যে মেরামত হয়ে গেলে বাসে যাবার জন্য উর্মি হাঁটা শুরু করেন। আর রতন ছেলেকে কোলে তুলে নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন এসে পড়ে। উর্মি রেললাইন পার হতে পারলেও তার স্বামী ও সন্তান ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় বাসের অপর এক যাত্রীও তাদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান।

সরেজমিনে জোনাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাশাপাশি দুই খাটিয়ায় কাফনের কাপড়ে ঢেকে বাবা-ছেলের লাশ রাখা হয়েছে। পুরো বাড়ি ও পাশের রাস্তায় লোকে লোকারণ্য। লাশের পাশে বসে বুক চাপড়ে কাঁদছিলেন রতনের স্ত্রী উর্মি, রতনের বাবা-মা ও একমাত্র জমজ ভাই মানিক প্রামাণিক।

এ সময় বিলাপ করতে করতে উর্মি খাতুন বলছিলেন, ‘আমি শুধু একটা শব্দ শুনতে পেলাম। পেছন ফিরে দেখি আমার স্বামী-সন্তান যেন উড়ছে। ১৫-২০ হাত দূরে গিয়ে তারা যখন আছড়ে পড়েছে, তখন তাদের হাত-পা, মাথা ছিন্নভিন্ন। আমি ছুটে ছুটে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া স্বামীর মাথা, সন্তানের হাত-পা কুড়িয়ে কুড়িয়ে জোড়া লাগানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু বাঁচাতে পারিনি।’

রতনের অপর চাচাতো ভাই ছাত্রলীগ নেতা মাহিন জানান, ভোর ৪টার দিকে ভাই ও ভাতিজার লাশ নিয়ে আমরা বাড়িতে ফিরেছি। ঘটনাস্থলে রেললাইনে একটি বাঁক থাকায় আগে থেকে ট্রেনটি দেখা যায়নি। এ জন্যই হয়তো দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। শনিবার বেলা ১১টায় জোনাইল ডিগ্রি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে পাশাপাশি বাবা-ছেলের লাশ দাফন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যাট হাতে সাকিবের তাণ্ডব, হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় অ্যান্টিগার

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে জাকার্তা, ঢাকার অবস্থান কত?

প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঔষধি উদ্ভিদ বনওকড়া

হার্ট অ্যাটাক আসার আগে যে ৮ সিগন্যাল দেয় শরীর

একীভূত হতে যাচ্ছে যে ৫ ব্যাংক

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে গেল ইলিশের প্রথম চালান

সৃজিতের নতুন সিনেমায় আবীর-টোটা

কারা পাবেন দুর্গাপূজার ছুটি, কবে থেকে শুরু?

জিতেছে বাংলাদেশ, দূর হয়নি পুরোনো সমস্যা

ভক্তদের চমকে দিলেন আলিয়া! 

১০

গাজায় ইসরায়েলের বৃষ্টি বোমা, পালাচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি 

১১

মা হতে চলেছেন ক্যাটরিনা কাইফ

১২

আফগানিস্তানকে হারানোর পর নতুন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ

১৩

চট্টগ্রামে সিলিন্ডারের গুদামে বিস্ফোরণে দগ্ধ ১০

১৪

তপশিলের আগেই ৭০% প্রার্থী ঘোষণার প্রস্তুতি, যাদের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা

১৫

চাকসু নির্বাচন : ২৭ হাজার ভোটারের বিপরীতে প্রার্থী ১০৮৮ 

১৬

ইসরায়েলের কাছে নতি স্বীকার করল সিরিয়া

১৭

বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর, কখন ডাক্তার দেখাবেন?

১৮

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিল কানাডা

১৯

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ভয়ে ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না জাপান 

২০
X