জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মোশাররফগঞ্জে একটি বাগানের কলা চুরির অভিযোগে শাওন নামে এক কলেজছাত্রকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনার ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্যাতিত শাওন স্থানীয় একটা কারিগরি কলেজের শিক্ষার্থী। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের একটি খামারে মাছচাষ করা হয়। সেখানে কলার বাগানও আছে। সেই বাগানের কলা চুরির সন্দেহে ওই কিশোরকে আটক করে একটি ভবনের জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন খামারটির কেয়ারটেকার মো. সামিউল হক।
বেধড়ক পিটুনির পর স্থানীয় লোকজন ওই কিশোরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই কিশোর বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, রাতে কিশোরকে একটি পাকা ঘরের জানালার গ্রিলের সঙ্গে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। একজন নারী ওই নির্যাতনকারীকে থামানোর চেষ্টা করছেন। তারপরও ওই কিশোরকে উপর্যুপরি পেটানো হচ্ছিল। আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত থাকলেও নির্যাতনকারীকে তারা থামানোর চেষ্টা করেননি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের মধ্য থেকে কেউ একজন মুঠোফোনে দৃশ্যটি ধারণ করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর মো. সামিউল হক বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
তবে একাধিক প্রতিবেশী জানান, আহত শাওন অভিযুক্ত সামিউলের ছেলে আজিমের বন্ধু। তবে মারধরের ঘটনা তারা জানতেন না।
আহত কিশোর শাওন জানায়, সে ওই খামার থেকে কোনো কলা চুরি করেনি। অহেতুক সন্দেহের বশে জানালার গ্রিলের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। লম্বা একটি লাঠি দিয়ে তার দুই পা ও সারা শরীরে পেটানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমি বিচার চাই।
ইসলামপুর থানার ওসি সুমন তালুকদার জানান, কিশোরকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি তাদের নজরে আসে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন