কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নেই নিজস্ব স্কুল, অস্তিত্ব হারাচ্ছে রাখাইনদের বর্ণমালা

শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে সংগৃহীত রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ণমালা। ছবি : কালবেলা
শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে সংগৃহীত রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ণমালা। ছবি : কালবেলা

কুয়াকাটার অলংকার বলে খ্যাত রাখাইন গোষ্ঠী। নিজেদের অতীত অনেক জৌলুশে থাকলেও সময়ের বিবর্তনে এখন তা কোণঠাসা হয়ে আছে। নিজস্ব বর্ণ শেখার কোনো স্কুল না থাকায় অস্তিত্ব হারাচ্ছে রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ণমালা শেখা।

প্রত্যেক জাতির কিংবা গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে তৈরি করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রাখাইন সম্প্রদায় এ জনপদের আদি বাসিন্দা হলেও আজ পর্যন্ত তারা তৈরি করতে পারেনি তাদের নিজস্ব ভাষার স্কুল। স্থানীয় প্রশাসন কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে এগিয়ে আসেনি কেউই।

নিজেদের ভাষার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার আকুতি জানিয়ে স্থানীয় খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ওয়েনাইচু বলেন, আমরা বাধ্য হয়েই বাংলা ভাষা শিখছি। আমরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে যে ভাষা ব্যবহার করি তা কিন্তু লিখতে পারি না। স্কুল কলেজে গিয়ে বাংলা শিখছি কিন্তু আমরা হারাতে বসেছি আমাদের নিজস্ব পরিচয়, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি।

শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের ঠাকুর (ভান্তে) ইন্দ্রবংশ বলেন, আমরা সকালে এখানে নিজস্ব ভাষার বর্ণমালা ও বার্মা ভাষায় লেখা কিছু বর্ণমালা শেখানোর চেষ্টা করি। এটি শুধু মন্দিরভিত্তিক না হয়ে আরও বড় পরিসরে হলে ভালো হয়। তাহলে এ বর্ণ টিকে থাকত প্রজন্মের মাঝে। আমরা চাই নিজস্ব একটি স্কুল থাকুক। সরকার দেখভাল করুক।

শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের ছাত্র মংমংশ বলেন, এক সময় আমরা নিজ উদ্যোগে মন্দিরে এ বর্ণমালা শিখতাম। এখন শেখার ব্যবস্থা নেই, তাই শিখছি না। তবে প্রতিষ্ঠান থাকলে রেগুলার শিখতে পারতাম।

মুসুল্লিয়াবাদ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মো. সাইদুর রহমান বলেন, প্রতিটি জাতির নিজস্ব ভাষায় স্কুল থাকা প্রয়োজন। স্থানীয় রাখাইনদের বর্ণমালা বাঁচিয়ে রাখতে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলে মনে করছি।

রাখাইন নেত্রী ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের প্রেসিডেন্ট নিউ খেইন বলেন, আমরা টিকে থাকার জন্য বাধ্য হয়েই বাংলা ভাষা শিখছি। আমাদের নিজস্ব বর্ণমালা শেখানো হবে এমন একটি স্কুল চাই। যেখানে মনের আনন্দে আমাদের সন্তানরা নিজ প্রাণের বর্ণ শিখতে পারবে।

কেরানিপাড়ার উঁচে মাদবর জানান, একটা সময় আমরা এ পাড়ায় নিজ উদ্যোগে বর্ণমালা শেখাতাম কিন্তু যিনি শেখাবেন তাকে বেতন না দিতে পারা, বই না পাওয়া, জায়গা না পাওয়া সব মিলিয়ে নানা সমস্যায় বন্ধ হয় বর্ণ শেখানোর কাজ।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, রাখাইন সম্প্রদায় নিজেরা উদ্যোগ গ্রহন করলে আমরা যথাযথভাবে সাহায্য করবো। তাদের নিজস্ব বর্ণ শেখার একটা প্রতিষ্ঠান করার চেষ্টা করা হবে ভবিষ্যতে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভূমিকম্প / জবি ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

ইবির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের নতুন ডিন ড. আব্দুস শাহীদ

সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক

সাংবাদিকদের ওপর হঠাৎ কেন ক্ষুব্ধ সোহেল রানা

‘তৌহিদি জনতার’ সঙ্গে বাউল শিল্পীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, আহত ৪

ভূমিকম্প ঝুঁকি / গ্যাস কূপ খনন কার্যক্রম বন্ধ

তরুণদের নিয়ে প্লাস্টিকমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ার অভিযানে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’

না ফেরার দেশে সাবেক খেলোয়াড় ও আম্পায়ার

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ল

জাতিসংঘ-বাংলাদেশ-মালদ্বীপের সমন্বিত উদ্যোগে অভিবাসী কল্যাণে নতুন সম্ভাবনা

১০

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু

১১

বুলবুলকে ‘বাংলার এরদোয়ান’ বললেন সাদিক কায়েম

১২

ফেনীকে নতুন করে গড়তে চাই, সুযোগ দিন : মঞ্জু

১৩

৪৭তম বিসিএস / শাহবাগে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান, যান চলাচল বন্ধ

১৪

ভূমিকম্পে এক ভবনে হেলে গেল আরেকটি ভবন, এলাকায় আতঙ্ক

১৫

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্ববাজারে বড় বিপদে ভারত

১৬

‘আয়ারল্যান্ডকে অভিনন্দন, দারুণ ব্যাটিং করেছে তারা’

১৭

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল

১৮

ভূমিকম্প আতঙ্ক : জবিতে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ

১৯

পদ্মার চর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

২০
X