ছেলের মৃত্যুর শোকে বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে নিহত তরুণ নাঈমের মা লাকি বেগম। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নাঈম সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে এসেছিলেন ঢাকায়। বাবা-মায়ের কষ্ট লাঘব করতে এইচএসসি পাস করা নাঈম রাত দিন পরিশ্রম করত।
নাঈম বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের ছোট গৌরীচন্না এলাকার দরিদ্র ভ্যানচালক নান্টু ও লাকি দম্পতির একমাত্র ছেলে। দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় ছিলেন নাঈম।
বাবা নান্টু মিয়া ও মা লাকি বেগম হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ছেলে নাঈমকে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়েছেন। বাবা-মায়ের কষ্ট লাঘবে এইচএসসি পাসের পর কাজের সন্ধানে ঢাকায় এসেছিল নাঈম। এক মাস অন্য এক জায়গায় কাজ করে মাত্র তিন দিন আগে এই ভবনে থাকা একটি কোম্পানিতে কাজ নেন তিনি।
পুরো বিল্ডিংয়ে যখন আগুন ছড়িয়ে পরছিল তখন বাঁচার জন্য ভবনের ছাদে গিয়ে বাবাকে ফোন করে বাঁচার আকুতি জানায় নাঈম। পরে নাঈমকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। শেষবারের মতো নিথর দেহে ছেলেকে দেখতে হলো বাবার।
নাঈমের এমন অকাল মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে বইছে শোকের মাতম। বাড়িতে ছুটে আসছে স্বজন ও এলাকাবাসী। নাঈমের নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সহপাঠীরাও।
নাঈমের আকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার কবির।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত কোজি কটেজ নামের বহুতল এই ভবনে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন