কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার সিটি করপোরেশনের (কুসিক) উপ-নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিন মেয়র প্রার্থী। বলা হচ্ছে, এমপি বাহার তার কন্যা বাস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনার পক্ষে প্রকাশ্যে গণসংযোগ ও সভা করে ভোট চাইছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা তাদের গণসংযোগে এসব অভিযোগ প্রচার করছেন।
কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার এবং হাতী প্রতীকের প্রার্থী নূর উররহমান মাহমুদ তানিম।
আগামী ৯ মার্চ মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে প্রচার শুরুর পর থেকেই এই তিন প্রার্থী ভোটের মাঠে এমপি বাহারের প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি বলে আসছিলেন। এ বিষয়ে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হাতি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম।
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার সাংবাদিকদের বলেন, কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তার কন্যার মেয়র প্রার্থী সূচনার পক্ষে সরাসরি কাজ করছেন। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার ও মিটিং করেছেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন কাজ করছেন, যা তিনি পারেন না। বিষয়টি আমি নির্বাচন কমিশনে জানাব।
এদিকে নগরীর ঠকুরপাড়া এলাকায় গণসংযোগ চালাতে গিয়ে হাতি প্রতীকের প্রার্থী ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সরাসরি তার মেয়ের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি তার মেয়েকে নিয়ে প্রকাশ্যে মিটিং করছেন, মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসকে নির্বাচনী অফিস বানিয়ে সেখানে বসে তিনি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। যেটা নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
অপরদিকে নগরীর শাসনগাছা এলাকায় গণসংযোগকালে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী বিএনপির সাবেক নেতা ও দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, নির্বাচনী ধারা অনুযায়ী একজন সংসদ সদস্য প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে পারেন না। গত নির্বাচনেও তিনি এমনভাবে প্রচার চালিয়েছিলেন। এই উপনির্বাচনেও যদি তিনি এ ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন তাহলে এর দায়ভার নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে মেয়র প্রার্থী ও এমপি বাহারের কন্যা তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, আমার পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই। বাকি যেসব অভিযোগ দেখছি, এগুলো খুবই অমূলক মনে হচ্ছে। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে নির্বাচন কমিশনে করুক। তবে আমি বলব, যদি কেউ প্রমাণ ছাড়া কোনো অভিযোগ করে বরং তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া উচিত। এ ধরনের কথাবার্তা আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রতিহত করে, আমাদের ভোটারদের আগ্রহ কমিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাঠ খুব উৎসবমুখর আছে। আমি যেখানেই যাচ্ছি ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। এই জনপদের মানুষ আমার খুব আপনজন। তারা আমাকে কাছে টেনে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য যদি ভোট চেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি নির্বাচনী ধারা অনুসারে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। কোনো প্রার্থী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ তুললে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এর আগে নগরীর চৌয়ারা এলাকায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভা করার বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম। সে বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি।
মন্তব্য করুন