বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় তরুণদের কর্মস্পৃহা, আত্মপ্রত্যয় ও ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতার প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) যশোর জেলায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন RAISE প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিদর্শনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে অনানুষ্ঠানিক খাতের গুরুত্ব উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বৃহদাংশ এ খাতের সাথে সম্পৃক্ত। অনানুষ্ঠানিক খাতে নিযুক্ত সম্ভাবনাময় কর্মী ও উদ্যোক্তাদের সীমিত কারিগরি দক্ষতা, সামাজিক রীতি, অপ্রতুল আর্থিক সেবাপ্রাপ্তির পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারিসৃষ্ট বিভিন্ন সংকটের সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে, প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, পরামর্শ সেবা ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে RAISE প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে, আবদুলায়ে সেক-এর নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল পিকেএসএফ এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থা আদ-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউন্ডেশন এবং শিশু নিলয় ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অফ ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (RAISE)’ প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ পরিদর্শনে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন পিকেএসএফ-এর মহাব্যবস্থাপক ও RAISE প্রকল্প সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, বিশ্বব্যাংকের প্র্যাক্টিস ম্যানেজার (সোশ্যাল প্রোটেকশন অ্যান্ড জবস) জেম মেট, সিনিয়র ইকোনমিস্ট (সোশ্যাল প্রোটেকশন অ্যান্ড জবস) হাভিয়ের সানচেজ-রেয়াজা, RAISE প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার আনিকা রহমান এবং পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও RAISE-এর উপ-প্রকল্প সমন্বয়কারী গোলাম জিলানী।
তারা RAISE প্রকল্পভুক্ত তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি, RAISE-এর শিক্ষানবিশি কার্যক্রম সম্পন্নকারী তরুণদের সাথে তাদের নতুন কর্মক্ষেত্রে মতবিনিময় করেন এবং চলমান শিক্ষানবিশি কার্যক্রমের আওতায় হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ পরিদর্শন করেন। তারা RAISE প্রকল্পভুক্ত তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য চলমান ‘ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও উদ্যোগ উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়াও, তারা প্রকল্পভুক্ত তরুণ উদ্যোক্তা, শিক্ষানবিশ, মাস্টার ক্র্যাফটসপার্সন ও কোভিড মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং অনানুষ্ঠানিক খাতে টেকসই কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত হন। প্রতিনিধি দল সহযোগী সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ইউনিট-এর অ্যাকাউন্টস অফিসারদের জন্য চলমান আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও পর্যবেক্ষণ করেন।
ছোটো উদ্যোগে মানব সক্ষমতা বিকাশের লক্ষ্যে পিকেএসএফ ফেব্রুয়ারি ২০২২ হতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল সম্বলিত RAISE প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে। পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের আওতায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, তরুণদের শোভন ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থানে যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে RAISE প্রকল্প সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (SDG) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
মন্তব্য করুন