আমি এখন পর্যন্ত আমার বাবা-মায়ের স্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারিনি। এতিম হওয়া যে কত বড় কষ্টের, যারা এতিম হয়েছে তারাই একমাত্র বুঝতে পারে। যে হয়নি, সে বুঝতে পারবে না যে এতিম হওয়া কত বড় কষ্টের; এমন মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নারীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, একটা বাচ্চা যখন আস্তে আস্তে বড় হয়, বাবা-মা তার হাত ধরে ধরে হাঁটা শেখায়। তার হাত যদি সব সময় ধরে রাখে, সে কিন্তু দৌড়ানো শিখবে না। একটা সময় বাচ্চাটার হাত ছেড়ে দিতে হয়, তারপর বাচ্চাটা দৌড়ানো শেখে।
শামীম ওসমান বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধানের পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। সেদিন শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি, তার পুরো বংশকে হত্যা করা হয়েছে। শুধু দুজন বেঁচে গেছেন। তারা হলেন, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
তিনি বলেন, আজ আমার সামনে যারা আছেন, তারা হলেন নারী সমাজ। আপনাদের সম্মান অনেক উঁচুতে। কিন্তু সমস্যটা হলো আমাদের অনেক নারী আছেন যারা মনে করেন ‘আমি একটা মেয়ে মানুষ, আমি কীভাবে পারব’। মেয়ে বলে আপনারা পিছিয়ে থাকবেন, আমি এই জিনিসটা মানতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, এই সমাজ ব্যবস্থা আমার কাছে খুব ঘৃণা লাগে। আমি এই জন্য একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবেও নিজেকে ঘৃণা করি। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি নিজেও হজরত খাদিজা (রা.) এর ব্যবসা দেখভালের চাকরি করেছেন। নারী বলে কোনো ধর্মেই ঘরে বসে থাকতে বলেনি।
শামীম ওসমান বলেন, অনেক সময় দেখা যায় একটা প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে চাইলেই বাসার নিচে রাস্তা থেকে হেঁটে আসতে পারে। ছেলে যদি তার মাকে এই কথা বলে, তার মাও নিশ্চিন্তে থাকে। কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে যদি তার বাবা-মাকে একই কথা বলে তখনই বাবা-মায়ের বিপত্তি বাধে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? রাস্তায় কে থাকে? বিষধর সাপ থাকে? নরঘাতক থাকে নাকি নরপশু। এই নরপশুগুলোকে বন্ধ করার জন্য আমি একটা অরাজনৈতিক সংগঠন করেছি যার নাম প্রত্যাশা। কারণ, আমি চাই যাতে একটা মেয়ে রাতে বের হলে তার কোনো কিছু নিয়ে ভয় না লাগে। মেয়ের বাবা-মা যেন নিশ্চিন্তে থাকতে পারে।
এ সময় অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইসহ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন