পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ছিনতাই হওয়া সোনাসহ অজ্ঞান পার্টির দুই সদস্য গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে নীলফামারীর জলঢাকার ছয়ঘড়ি ও শৈলমারী এলাকা থেকে তুষার মাহমুদ ও কালা মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের থেকে ৬৯ হাজার টাকা, একটি গলার হার, দুই জোড়া বালা ও একজোড়া ঝুমকা উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগী বিউটি রানী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২৩ মার্চ বিউটি রানী সোনাহারের শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি লক্ষ্মীরহাটের উদ্দেশে ইজিবাইকে রওনা হন। সোনাহার থেকে দেবীগঞ্জে আসার পর তিনি লক্ষ্মীরহাটে যাওয়ার উদ্দেশে চৌরাস্তা এলাকায় অপেক্ষা করতে থাকেন। এই সময় অজ্ঞাত এক ইজিবাইকচালক লক্ষ্মীরহাট যাবেন বলে বিউটি রানীকে ডাক দেন। তিনি ইজিবাইকে উঠলে সেখানে প্রথম থেকেই একজন পুরুষ যাত্রী ছিল এবং কিছু দূর যাওয়ার পর আরও দুজন যাত্রীবেশে ওঠেন। পথিমধ্যে করতোয়া সেতুর ওপর ইজিবাইকটি আসলে যাত্রীদের একজন হুট করে ইজিবাইক থামিয়ে নিচে পড়ে থাকা একটি পার্স কুড়িয়ে নেয়। পরে সেটি খুললে তাতে টিস্যুতে মোড়ানো সোনার বার সদৃশ বস্তু ও একটি চিঠি পাওয়া যায়। সেখানে সোনার বারটিতে ৫ ভরি সোনা আছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পরে ইজিবাইক চালকসহ উপস্থিত চারজনই সোনার বারটি নেওয়ার জন্য বিউটি রানীকে অনুরোধ করতে থাকেন এবং তাকে চিঠিটি পড়ার জন্য দেন। এ সময় বিউটিকে বুঝানো হয় যে তার সঙ্গে থাকা সোনার গহনার বদলে সোনার বারটি নিলে লাভবান হবে।
ভুক্তভোগী বিউটির গলায় তখন ১৪ আনা ওজনের গলার হার ও কানে ৭ আনা ওজনের ঝুমকা ছিল। চিঠিটি হাতে পাওয়ার কিছুক্ষণ পরে বিউটি চেতনা হারাতে থাকে এবং অবচেতন মনে গলার হার ও কানের ঝুমকা খুলে তাদের কাছে দিয়ে দেয়। পরে বিউটিকে সোনাপাতা-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নামিয়ে দিয়ে ইজিবাইকটি দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
ঘটনার পর বিউটি বিষয়টি তার পরিবারকে জানায় এবং দেবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তে নামে পুলিশ। বিউটি রানীর বাবা সুকাতু জানান, পুলিশ গলার হার উদ্ধার করতে পেরেছে। কানের ঝুমকা উদ্ধারে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে।
অজ্ঞান পার্টির সদস্য আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখার মোকাদ্দেম বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিকটিম রানীর ঝুমকা উদ্ধারেও চেষ্টা চলছে।’
মন্তব্য করুন