শজনে গাছ রোপণ করে বাড়তি আয় বেড়েছে জয়পুরহাটের কৃষক পরিবারে। দিন দিন শজনে চাষ বেড়েই চলেছে। চলতি মৌসুমে বাজারে শজনের ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।
জানা যায়, অন্যান্য ফসলের মতো চাষকৃত জমিতে শজনে চাষ করা হয় না। জমির ধারে, বাড়ির খুলিতে, সড়কের পাশে, পতিত জমিতে সাধারণত শজনে গাছ লাগানো হয়। আর এসব গাছ থেকে শজনে বিক্রি করে বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। আগাম বাজারে আসা শজনে ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে পাইকারি বাজারমূল্য প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকা।
সদর উপজেলার ধুলাতর গ্রামের কুষক মুকুল হোসেন জানান, তার বাড়ির পাশে দুটি শজনে গাছ আছে। প্রথম দিকে ৭০ টাকা কেজি দরে ২৫ কেজি শজনে বিক্রি করেছেন। এখন দাম কমে ৪০ টাকা কেজি। দুটি গাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার টাকার শজনে বিক্রি করেছেন।
ধারকি আকন্দ পাড়ার বেলাল হোসেন জানান, তার একটি গাছে ৩০ কেজি শজনের ফলন হয়েছিল। ২০ কেজি ৯০ টাকা দরে বিক্রি করেন। বাকি ১০ কেজির মতো নিজেরা খেয়েছে এবং কিছু প্রতিবেশীদেরও দিয়েছেন।
বেলাল হোসেন জানান, রাইখঞ্জন নামের বারোমাসি শজনে খেতে খুব সুস্বাদু। এ শজনে গাছ খুব কম আছে। আর এর দাম বেশ ভালো। সাধারণত গ্রামের মেয়েরা শজনে গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করেন বলেও জানান তিনি।
তাদের ভাষ্য শজনের ডাল চারা হিসেবে মাটিতে ভালোভাবে পুঁতে রাখলে গাছ উঠে। ডাল লাগানোর পর গরু ছাগল নষ্ট না করলেই হলো। আর কোনো বাড়তি পরিচর্যার দরকার হয় না। শজনে গাছ ঝড়ে ভেঙে যাওয়া ছাড়া সাধারণত নষ্ট হয় না। দাম কমবেশি যা হোক বাজারে চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
সদর উপজেলার সাহাপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফুল আলম শজনের পাইকারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি জানান, প্রথম প্রথম দাম বেশি ছিল। এখন তারা ৪০ টাকা কেজি দামে কিনে ঢাকা নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাকযোগে নিয়ে বিক্রি করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে পরিচিত শজনের চাষ হয়ে থাকে। জেলায় প্রায় হাজার হেক্টর জমির শজনে গাছ থেকে সাড়ে ১০ হাজার টন শজনে উৎপন্ন হয়ে থাকে। জেলার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয় এ শজনে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, পুষ্টিকর খাদ্য শজনে চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এবার দামও বেশ ভালো।
মন্তব্য করুন