সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গ্রীষ্মের শুরুতেই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। আর নলকূপে পানি না ওঠায় হাজার হাজার মানুষ সুপেয় পানির সংকটে পড়েছেন।
চলতি বোরো আবাদে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিপাকে পরেছেন কৃষকরা। আবাদে বেড়েছে খরচ।
জানা গেছে, গ্রীষ্মকাল শুরুর আগেই চলনবিল এলাকার নলকূপগুলোতে কাঙ্ক্ষিত পানি উঠছে না। বেশিরভাগ নলকূপে প্রয়োজনীয় খাবার পানি মিলছে না। প্রয়োজনীয় পানি না ওঠায় বর্তমানে পানি সংগ্রহে গ্রামের লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
অনেকেই সুপেয় পানির সংকট মোকাবিলায় বাড়ির নলকূপ উঠিয়ে অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গায় স্থানান্তর করছেন। গ্রামের অনেক নারীই সুপেয় পানি সংগ্রহে বাড়ির নিকটবর্তী বোরো স্কিমের গভীর-অগভীর ইঞ্জিন চালিত শ্যালো মেশিন থেকে সকাল বিকেল কলসি ও বালতি নিয়ে পানি সংগ্রহ করছেন।
উপজেলার তালম ইউনিয়নের পাড়িল গ্রামের গৃহবধূ ফেরেনা খাতুন বলেন, বাড়ির নলকূপে ঠিক মতো পানি উঠছে না। এক বালতি পানি বের করতে নলকূপ চাপতে চাপতে হয়রান হতে হয়। তাই বাড়ির নলকূপটি উঠিয়ে অপেক্ষৃত নিচু জায়গায় বসিয়েছি। কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হচ্ছে না।
একই গ্রামের কৃষক মতিবর হোসেন জানান, প্রায় এক মাস যাবৎ আমাদের বাড়ির নলকূপে পানি কম উঠছে। বাড়ির পানির চাহিদা পূরণে কষ্ট হওয়ায় নলকূপটি উঠিয়ে বাড়ির নিচে অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গায় স্থানান্তর করেছি। কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই পানির জন্য নিকটবর্তী বোরো স্কিমের অগভীর শ্যালো মেশিনে যেতে হচ্ছে।
উপজলোর কুন্দইল গ্রামের কৃষক জুলফিকার আলী জানান, শুধু খাবার পানিই নয় গৃহস্থলীর কাজেও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে চলনবিল এলাকায়। বিভিন্ন এলাকায় শত শত পুকুর থাকলেও বেশিরভাগ পুকুরে মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করে পানি দূষিত করা হচ্ছে। আবার অনেকেই পুকুরে মাছ চাষ করায় তাতে নামতেও দিচ্ছে না। ফলে সংকট আরও বাড়ছে।
তাড়াশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আলআমিন বলেন, চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা। মূলত একেক জায়গার পানির স্তর একেক রকম। তাছাড়া চলনবিল অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে পানির ব্যাপক ব্যবহারসহ নানা কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এ কারণে নলকূপ ও গভীর-অগভীর সেচযন্ত্র গুলোতে পর্যাপ্ত পানি ওঠে না। তাই বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। তবে এ অবস্থা সাময়িক। বৈশাখ-জ্যেষ্ঠ মাসে বৃষ্টি শুরু হলেই আপনা-আপনি পানির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন