কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আবারও পানের বরজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পাটুয়াকান্দির খুশিরপাড়া নামক স্থানে আগুনের সূত্রপাত।
এ সময় অগ্নিকাণ্ডে ৩৫ জন কৃষকের ৪০ বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পিলি পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় এলাকাবাসীসহ ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
সরেজমিনে এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষি সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পাটুয়াকান্দির ফরজ আলী ফরাজির পানের বরজে অগ্নিকাণ্ডের প্রথম সূত্রপাত। তীব্র দাবদাহের কারণে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সঙ্গে এলাকাবাসী চেষ্টা করে ৩ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে প্রায় ৪০ বিঘা বরজের সাড়ে ৩ হাজার পিলি পান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২ কোটি টাকা বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা।
ধরমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল হক বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ৩৫ জন পান চাষির প্রায় ৪০ বিঘা পানের বরজ একেবারে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ধারণা করছি, বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। খুব ক্ষতি হয়ে গেল। আগামীকাল উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে বসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করব। সরকারের সাহায্য প্রার্থনা করছি।
ভেড়ামারায় বিভিন্ন স্থানে পান বরজে বারবার আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভেড়ামারা থানার ওসি জহুরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমার মনে হয় শ্রমিকদের অসাবধানতা ও তীব্র দাবদাহের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ফায়ার সার্ভিস ও বিশেষজ্ঞ টিম এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম ট্রেনিংয়ে থাকায় সহকারী সাব স্টেশন অফিসার আইয়ুব হোসেনের সঙ্গে বারবার মোবাইলে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে শরিফুল ইসলাম বলেন যতদূর শুনতে পেরেছি, পানির সংকটের কারণে আগুন নিভাতে দেরি হয়েছে। তা ছাড়াও আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু বলেছেন, আগুনের সূত্রপাত হয়েছে শুনেই আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। শুনেছি ৩০-৪০ বিঘা পান বরজ পুড়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করার জন্য। আমরা সরকারের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার ব্যবস্থা করব। তবে এখানে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
মন্তব্য করুন