ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তীব্র দাবদাহে বেড়েছে ইরি-বোরো আবাদের খরচ

পুকুর থেকে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি তুলে ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন কৃষক। ছবি : কালবেলা
পুকুর থেকে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি তুলে ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন কৃষক। ছবি : কালবেলা

‘দুই সপ্তাহ থেকে আকাশ ফেটে যেন আগুন ঝরছে। তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এদিকে সারাদিনে তিন ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকছে না। নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকায় সেচ পাম্পের মালিক ক্ষেতে পানিও দিতে পারছেন না। সেচের অভাবে ধানক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন বসিয়ে ক্ষেতে পানি নিতে হচ্ছে। ফলে এ বছর একই জমিতে সেচের দ্বিগুণ খরচ বহন করতে হচ্ছে।’

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মাঠে শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে কথাগুলো বলছিলেন বোরো চাষি যোতিশ চন্দ্র রায়। তাপপ্রবাহের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বোরো ধানক্ষেত রক্ষার জন্য তিনি শ্যালো মেশিনে ঘণ্টা চুক্তিতে ক্ষেতে সেচ দিচ্ছিলেন।

ওই মাঠে বোরো ক্ষেতে সেচ দিচ্ছিলেন ঘুঘুজান কৃষক গ্রামের রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ জমিতে ধান ওঠা পর্যন্ত মোটর দিয়ে পানি দেওয়ার জন্য সেচ পাম্পের মালিককে দেড় হাজার টাকা দিতে হয়। কিন্তু এবার সেই খরচ দুই হাজার টাকারও বেশি পড়বে। কারেন্ট থাকে না, এ জন্য দুদিন পর পর ২০০ টাকা ঘণ্টা চুক্তিতে দুই ঘণ্টা করে পানি দিতে হচ্ছে। এরপরও শুকিয়ে যাচ্ছে বোরো ক্ষেত।

উপজেলার এলুয়ারি গ্রামের কৃষক মোক্তার হোসেন বলেন, এ বছর এক একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। ধান কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত তার সেচ খরচ বাবদ ছয় হাজার টাকা এবং কীটনাশক বাবদ সাড়ে তিন হাজার টাকার মতো খরচ হওয়ার কথা। কিন্তু দাবদাহের কারণে খরচ বেড়ে গেছে। এবার গতবারের চেয়ে সেচ খরচে প্রায় দুই হাজার ও কীটনাশক খরচ এক হাজার টাকা বেশি পড়বে।

চলমান তাপপ্রবাহে যোতিশ চন্দ্র রায়, রফিকুল ইসলাম ও মোক্তার হোসেনের মতো ফুলবাড়ী উপজেলাতে হাজারো কৃষক চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কৃষকরা বলছেন, তাপপ্রবাহ ‘হিট শক’ ও ব্ল্যাস্ট সংক্রমণ যাতে না হয়, সেজন্য ঘন ঘন সেচ ও ওষুধ ছিটাতে হচ্ছে বলে গত বছরের চেয়ে উৎপাদন খরচ বাড়বে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো চাষ মৌসুমে উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ১৭৯ হেক্টর জমি। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৫৬৪ টন। কৃষকরা ১৫ মার্চ পর্যন্ত বোরো চারা রোপণ করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের বিরূপ প্রভাব থেকে ফসলের খেত রক্ষা করার জন্য মাঠপর্যায়ে কৃষকদেরকে ক্ষেতে সেচ ধরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে কৃষকরা অনেক সচেতন। তাই তারাও মাঠে বোরো ধানের ক্ষেতসহ অন্যান্য ফসল রক্ষায় সব ধরনের চেষ্টা করছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফিলিস্তিনি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

কলকাতায় এখন মণিপাল হসপিটাল / সাধ্যের মধ্যে ক্যান্সার, লিভার ও কিডনি রোগের চিকিৎসা

সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১ জনের কারাদণ্ড, জরিমানা

ছিটকে পড়ে প্রাণ গেল চালকের

আ.লীগের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

স্যাম বন্ড ব্র্যান্ডের পরিবেশক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

জাতীয় এসএমই মেলা শুরু ১৯ মে

‘সর্বনাশ করেছে গণিতের শিক্ষক’

হাউসে কাউসারের পানি কেমন হবে, কারা পাবে, কারা পাবে না

ঢাবির ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত

১০

মাদকের নতুন ডিজি মোস্তাফিজ

১১

ইউক্রেনের ভয়াবহ বিপর্যয়, সব সফর স্থগিত জেলেনস্কির

১২

স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জন্মনিবন্ধন বানিয়ে দিচ্ছিল দুই তরুণ

১৩

রংপুরে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন

১৪

বড় দায়রা শরীফের উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্ব

১৫

পাচারের টাকা ফেরত আনতে বাজেটে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ সিপিবির 

১৬

ঝালকাঠিতে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

১৭

দিনে হিটস্ট্রোকের ভয়, রাতে ধান কাটছেন কৃষকরা

১৮

জামিন পেলেন ইমরান খান

১৯

বজ্রপাতে খেলোয়াড়ের মৃত্যু

২০
X