কুমিল্লার নগরীতে জটলা বেঁধে আড্ডা, ঘোরাঘুরি ও বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক আচরণ প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে ৩৯ কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
পরে রাত ১০টার দিকে ৩৯ কিশোরের অভিভাবকদের ডেকে এনে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিভাবকদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল ও নজরদারি রাখার আহ্বান জানায় পুলিশ।
জানা গেছে, কিছুদিন ধরে কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রশাসনের নজরে আসে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা নগরীর অশোকতলা, রানীর কুঠি সড়ক, নগর উদ্যান, নানুয়াদিঘী, রানীর দিঘীসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার (ওসি) ফিরোজ হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটক কিশোরদের অভিভাবককে ডেকে মুচলেকা দিয়ে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এসব কিশোর নিজেদের মধ্যে কোন্দল, চাঁদাবাজি, এলাকার নিয়ন্ত্রণ ও মাদক সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, উঠতি বয়সীদের মধ্যে ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে গ্যাং কালচার। তারা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে দলবেঁধে চলাফেরা ও বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল শোডাউন দেয়। এ ছাড়া তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর চড়াও হয়ে খুনোখুনির ঘটনা পর্যন্ত ঘটায়।
ওসি ফিরোজ হোসেন আরও বলেন, আমরা সকল অভিভাবক ও সমাজের দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি উঠতি বয়সী কিশোরদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার। যাতে তারা কোনোভাবেই অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ে। আমরা আটক করা কিশোরদের অভিভাবকদের জানিয়েছি, ভবিষ্যতে তাদের কোনো গ্যাং কালচারে পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সাংবাদিক সাদিক মামুন বলেন, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি পরিবারকে সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া এটি নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। গ্যাং কালচার থেকে কিশোরদের ফিরিয়ে আনতে শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মন্তব্য করুন