সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৪, ০৯:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘বন্যা শুরু হলি দৌড়ায়া আসার শক্তি নাই, তাই আগেভাগেই আইছি’

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত এলাকাবাসী। ছবি : কালবেলা
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত এলাকাবাসী। ছবি : কালবেলা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ঝড়ের কারণে মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে ঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে শুরু হয়েছে হালকা বৃষ্টিপাত। স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

শ্যামনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পিআইও মো. শাহিনুল ইসলাম জানান, রোববার সকালে ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের নির্দেশনা পেয়ে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৯ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ চলছে।

শ্যামনগর উপজেলার চুনা নদীর তীরের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে বিকেল ৪টার পর ৪০-৫০ জন আশ্রয় নিয়েছে।

সেখানে আশ্রয় নেওয়া বুড়িগোয়ালিনী মোল্লাপাড়া গ্রামের জহুর আলী গাজী (৬৫) বলেন, ঝড়ের অবস্থা খুব খারাপ মনে হচ্ছে। এ জন্য ভয়ে বউ, পোতা-পুতনি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আইছি। আইলায় সাহস করে অনেক মানুষ বাড়িতে থেকে মরছে। তবে আমাদের গ্রামের অনেকে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। তারা ঘরবাড়ি কী হয় এই ভেবে আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে না।

আশ্রয়কেন্দ্রটির পাশেই ছোট্ট ঝুপড়িতে বসবাস করেন শাহিন ইকবলের পরিবার। সেখানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গিয়ে দেখা তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রহিমা খাতুন (২৬) ও তার মা বসে আছে। অন্তঃসত্ত্বা হয়েও ঝুঁকি নিয়ে এখনো কেন আশ্রয়কেন্দ্রে জাননি এমন প্রশ্নে শাহীন ইকবালের স্ত্রী রহিমা খাতুন বলেন, আমাগো ঘর তো আশ্রয়কেন্দ্রের পাশে। তাই চিন্তা করছি ঝড় বেশি আসলে যাব। ওখানে অনেক লোক। আমি অসুস্থ তো তাই একটু নিরিবিলি বসে আছি।

একই ইউনিয়নের দাতিনাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে চুনা নদীপারের ৫০টি পরিবারের অন্তত এক থেকে দেড়শ জন। এর মধ্যে কাঞ্চন বিবির বয়স (৯০)। তিনি বলেন, বুড়া মানুষ। বন্যা শুরু হলি দৌড় দিয়া কেন্দ্রে আসার শক্তি নাই। তাই আগেভাগেই আইছি।

তবে, এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের কাছে এখন পর্যন্ত শুকনো খাবার পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, এখনো পর্যন্ত আমাদের কোনো খাবার দেওয়া হয়নি। এখানে যারা দায়িত্বে আছেন তাদের তারা বলছেন রাতে দেওয়া হবে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড় রিমাল
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

টেক্টর ঝড়ে বাংলাদেশের সামনে কঠিন লক্ষ্য

আইপিএলে দল পেলেন না অজি অধিনায়ক

ভুলেও সয়াবিন খাবেন না যে ৫ ধরনের ব্যক্তি 

গাজা নিয়ে ‘ভয়ংকর অভিযোগ’, অ্যামনেস্টির সতর্কবার্তা

জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৮ দলের খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ ১ ডিসেম্বর

নির্বাচিত হলে সমৃদ্ধ হবে দাগনভূঞা ও সোনাগাজী : আব্দুল আউয়াল মিন্টু 

নির্বাচিত হলে খাল দখলমুক্ত করে জলাবদ্ধতা দূর করব : কাজী আলাউদ্দিন

ঢাকা-১ আসন বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামের অন্যতম দুর্গ

বিএনপি থেকে ‘সুখবর’ পেলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

বাউলদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে : প্রেস সচিব

১০

ধবলধোলাই হওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ নিবে না বিসিসিআই

১১

যুবদলের এক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

১২

লিভারের জন্য বিপজ্জনক যে ৫ খাবার

১৩

কপোতাক্ষের পাড় কেটে মাটি উত্তোলন, ৪ জনের কারাদণ্ড 

১৪

নতুন কুঁড়ির সেরা দশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে স্বাধিকা

১৫

টানা ৩০ দিন প্রতি রাতে গুড় ভেজানো পানি খেলে কী হয়?

১৬

সরকারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নির্বাচন করবেন : আসিফ মাহমুদ

১৭

রুশ যুদ্ধবিমানকে ধাওয়া করছে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র, ভিডিও ভাইরাল

১৮

কুবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কালবেলার আবু শামা

১৯

ভারতে নতুন আতঙ্ক, বাঁচতে অদ্ভুত কাণ্ড

২০
X