ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মেঘনা উপকূলীয় এলাকা লক্ষ্মীপুরে। জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, জেলায় ২৮৪টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ চাঙ্গিরগাঁও গ্রামে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বসতঘর চাপা পড়ে নিস্পু (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন শিশুটির নানি হোসনেয়ারা বেগম (৬৫)।
সোমবার (২৭ মে) দুপুর আড়াইটায় উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নে দক্ষিণ চাঙ্গিরগাঁ গ্রামের দেবুর বাড়ির পাশে গরুর ব্যাপারী ছাকায়েত উল্যার বাড়ির লুৎফর রহমানের বসতঘরটি ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ভেঙে পড়ে। এ সময় ঘরের ভেতরে থাকা হোসনেয়ারা বেগম (৬৫) ও নাতনি নিস্পু (৭) ভেঙে যাওয়া ঘরের নিচে চাপা পড়ে।
প্রতিবেশীরা ঘরের নিচে চাপা পড়া হোসনেয়ারা ও নিস্পুকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার নিস্পুকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রামগঞ্জ থানার ওসি মো. সোলাইমান।
এদিকে জোয়ারের পানিতে জেলার কমলনগর নাসিরগঞ্জ এলাকায় ১০০ মিটারেরও বেশি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে করে এ এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার, এ ছাড়া অতিরিক্ত ৩ থেকে ৪ ফুট জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে উপকূলীয় এলাকার ৬৫ থেকে ৭০ হাজার মানুষ হাঁটু পানিতে ভোগান্তির শিকার হন।
তীব্র বাতাসে জেলার কমলনগরের মতির হাট, লুধুয়া, কালকিনি, সাহেবের হাট ও রামগতির চরগাজীসহ বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (লূধুয়া কওমি মাদ্রাসা) বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে দুই শতাধিক গাছপালা ভেঙে উপড়ে গেছে। এসব গাছ বিদ্যুতের খুঁটি ও মানুষের ঘরবাড়িতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এতে করে জেলার অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান ।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, ঘর চাপা পড়ে এক শিশু মারা গেছে। এ ছাড়া বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলায় ২৮৪টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে এমন তথ্যটি সঠিক নয় বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন