সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খালের ওপর থাকা ব্রিজটি ব্যবহার অনুপযোগী ছিল। স্কুলে আসা-যাওয়ার পরিবেশ না থাকায় স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম।
বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে খাল পারাপারের ভয়ে অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতেন না। যে কয়েকজন নিয়মিত ছিল তাদের অভিভাবকরাও দুশ্চিন্তায় থাকতেন।
এ বিষয়ে কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা প্রশাসনের। পরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাস্তবায়নাধীন গ্রামীণ রাস্তা ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালর্ভাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় খালের ওপর একটি নতুন সেতু তৈরি করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ব্রিজটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৮ টাকা। ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
ব্রিজের কাজ শুরু হওয়ায় স্কুলশিক্ষার্থী জান্নাতী খাতুন বলেন, খালে সব সময় পানি থাকায় আমরা স্কুলে আসতে পারতাম না। অনেক সময় পা পিছলে বই খাতা জামা কাপড় ভিজে যেত। সেদিন আর ক্লাস করতে পারতাম না। সেই ভোগান্তি দূর হচ্ছে। এখন আমরা সেতু পেয়েছি। আমাদের আর পানিতে ভিজে স্কুলে যেতে হবে না। এ জন্য ইউএনওকে ধন্যবাদ জানাই।
অভিভাবক খাইরুজ্জামান বলেন, স্কুলটি রাস্তায় পাশে হওয়ায় ভালো হলেও যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাইনি। এখন সেতু হচ্ছে আমার মেয়ে দুটো এখন নিয়মিত স্কুলে যাবে। এখন বাচ্চাদের নিয়ে আর দুশ্চিন্তা নাই।
স্থানীয় বাসিন্দা আকবর আলী বলেন, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের যাতায়াতের ভোগান্তি দূর হবে। উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার দাবিদার।
বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে জান্নাত বলেন, স্কুলের যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় অনেক অভিভাবক তাদের বাচ্চাকে এ স্কুলে দিতেন না। আর যারা এ স্কুলের শিক্ষার্থী তাদের অনেকেই এমন অবস্থায় ক্লাসে আসত না। এখন সেই ভোগান্তি দূর হচ্ছে। এ নিয়ে দৈনিক কালবেলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করায় আমরা ব্রিজটি পেয়ে আনন্দিত। এ ছাড়া গ্রামবাসীরা অনেক উপকৃত হবেন। আশা করছি, স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি আগামী বছর থেকে নতুন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়বে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় গ্রামীণ রাস্তা ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালর্ভাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় খালের ওপর একটি নতুন সেতু তৈরি করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি দূর হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, এ বিদ্যালয়ে যাতায়াত ও অবকাঠামোগত সমস্যা ছিল। পরে বিদ্যালয়টির পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হলেও খাল পারাপারের কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি ছিল খুবই কম। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেতু তৈরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর হবে।
মন্তব্য করুন