হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সদর ইউনিয়নের কুশিয়ারার শাখা নদীর সুজনী খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিগত কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা ও সড়কটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী। শুধু সেতুর সংযোগ সড়কেই নয় আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং (শরীফ উদ্দিন) সড়কের ২১ কিলোমিটারের বিভিন্ন অংশে দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দের বেহাল দশার সৃষ্টি হলেও সংস্কারে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সরেজমিনে সুজনী খালের ওপর নির্মিত ব্রিজে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির সংযোগ সড়কে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের প্রবেশ মুখে, ডাকবাংলোর সামনের অংশসহ ২১ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবছর র্বষার মৌসুম শুরু হলেই সড়কের বিভিন্নস্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। পরিপূর্ণ মেরামত না করায় প্রতিবছরই ভাঙা সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে।
জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) কতৃপক্ষ বলছে, ২১ কিলোমিটার সড়কটি পরিপূর্ণ মেরামতের জন্য ৩২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন না হলে ছোটখাট মেরামত ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রতিদিন একমাত্র এই ব্রিজটি দিয়ে আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং ভায়া জলসুখা সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল, বাস, সিএনজি, ইজিবাইকসহ মালবাহী বিভিন্ন ধরনের ট্রাক, পিকআপসহ শত শত গাড়ি জেলা সদর হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী বানিয়াচং উপজেলা ও নবীগঞ্জ উপজেলায় চলাচল করে।
বিগত তিন বছরে বর্ষা মৌসুমে কয়েকবার ওই সেতুর উভয়পাশের সংযোগ সড়ক ও রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর নামমাত্র মেরামত করা হলেও সম্প্রতি অতি বর্ষণে আবারও সংযোগ সড়ক ও রাস্তায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
এ সময় আলাপকালে, মুজিব মিয়া, সোহরাব উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী ও যাত্রীরা জানান, প্রতি বছর বর্ষার (বৃষ্টি) মৌসুমে সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। করা হয় মেরামতও তবে মেরামতের পরও বছর পেরুনোর আগেই বৃষ্টিতেই সংযোগ সড়কসহ সড়কের নানা অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এই সেতু দিয়ে শত শত পরিবহনে হাজারো যাত্রী ও মালামাল বহনকারী যানবাহন চলাচল করে প্রতিনিয়ত। বর্তমানে সেতুর সংযোগ সড়কটিতে যে ধরনের ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে তা অচিরেই মেরামত করা না হলে যাত্রীদের ভোগান্তিসহ ব্যবসায়ীরা পড়বেন বিপাকে। এ সময় সঠিকভাবে সেতুর সংযোগ সড়কের উভয় পাশের মেরামতেরও দাবি জানান স্থানীয়রা।
পিকআপ চালক কাউছার মিয়া বলেন, প্রতিদিনই জেলা শহর থেকে মালামাল নিয়ে আজমিরীগঞ্জ আসি। এই ব্রিজ পাড় হওয়ার সময় আতঙ্কে থাকি কখন গর্তে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
জলসুখা গ্রামের সাইকুল মিয়া, শিবলু মিয়াসহ এশাধিক বাসিন্দা বলেন, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে বের হওয়া ও প্রবেশের একমাত্র সেতু এটি। সংযোগ সড়কে ভাঙনের ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকি। শঙ্কা নিয়ে সড়কটি দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়।
সিএনজি অটোরিকশাচালক সাকু মিয়া বলেন, প্রতিদিন যাত্রী নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে জেলা শহরসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে আসা যাওয়া করি। সংযোগ সড়কটি ভাঙনের ফলে শঙ্কায় থাকি। বিশেষ করে রাতের বেলায় দুর্ঘটনার শঙ্কায় থাকি বেশি। এ সড়কের নানা অংশে ভাঙনের ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সল কালবেলাকে বলেন, ২১ কিলোমিটার সড়কটি মেরামতের জন্য ৩২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে আমরা পুরো সড়কটি সংস্কার করতে পারবো। এমনিতে আমাদের নিয়মিত যে সংস্কার তা আমরা করছি।
মন্তব্য করুন