কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গণধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল, গ্রেপ্তার ৩

গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি : কালবেলা
গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি : কালবেলা

গণধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে পরবর্তী সময়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা কুখ্যাত এক চক্রের ৩ জনকে গ্রপ্তার করেছে ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলো- মো. মাসুম (২৫), মো. শরীফ (২৩) ও মো. ইস্রাফিল (২২)।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) যাত্রাবাড়ীর ফলবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

যাত্রাবাড়ী থানা সূত্রে জানা যায়, ১৫ দিন আগে টেলিগ্রাম অ্যাপসের মাধ্যমে গণধর্ষণের শিকার এক ভিকটিমের সঙ্গে পরিচয় হয় চক্রটির মূল হোতা গ্রেপ্তারকৃত মাসুমের। পরবর্তী সময়ে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। প্রেমের সূত্র ধরে গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) ভিকটিমকে কাজলারপাড় এলাকায় এক বাসায় ডেকে আনে মাসুম। সেই বাসায় জোরপূর্বক আটকে রেখে মাসুম প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে তার দুই বন্ধু ইস্রাফিল ও শরীফ ভিকটিমকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে।

পরবর্তীতে তারা ভিকটিমকে ধর্ষণের আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। তখন ভিকটিম তার নিকট থাকা ৯ হাজার ৫০০ টাকা তাদের প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে তারা ভিকটিমকে একটি ভাড়া করা মোটরসাইকেলে তুলে দিয়ে তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা নিয়ে আসার কথা বলে।

অন্যথায় ধারণ করা ভিডিও পরিবারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। গত ১৫ জানুয়ারি ইস্রাফিল ভিকটিমকে ফোন করে বলে ১৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) মাসুম তার বন্ধুদের নিয়ে সাকরাইন অনুষ্ঠান করবে এবং তারা সেখানে তাকে যেতে বলে। না গেলে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করা হয়। ভিকটিম তাদের কথায় রাজি হয় এবং বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে অবগত করে।

থানা সূত্রে আরও জানা যায়, ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পরে শুক্রবার বিকেলে ভিকটিমের সঙ্গে কৌশলে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় যাত্রাবাড়ীর ফলবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে যাত্রাবাড়ী থানার একটি টিম। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৩টি মোবাইলফোন ও ভিকটিমের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে নেওয়া আট হাজার ৬৫০ টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাত্রবাড়ী থানায় ধর্ষণসহ পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্পর্কে থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অ্যাপসের মাধ্যমে নারীদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে এবং সেই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে।

পরবর্তী সময়ে ধারণকৃত ভিডিও পরিবারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে তাদের চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন সময়ে আবার ধর্ষণ করে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। মাসুম এ পর্যন্ত এরূপ ১৬টি ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। কোনো ভুক্তভোগী এসব ঘটনায় অভিযোগ না করায় গ্রেপ্তাররা এতদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল।

গ্রেপ্তারদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার নিবিড় তদন্ত ও ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাওয়ারপ্লেতেই ৪ উইকেট গেল বাংলাদেশের

সুদের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব, ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা

শুক্রবার থেকে টঙ্গীতে ৫ দিনের জোড় শুরু

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ফের পরিবর্তন, বাড়ল না কমলো?

দেশের নারী সমাজ বিএনপির প্রতি আস্থাশীল : সেলিমা রহমান

ক্রিকেটে ‘গ্রোভেল’ কী — এবং কেন এটি এত কুখ্যাত?

জরাজীর্ণ ভোটকেন্দ্র ও সিসি ক্যামেরার তথ্য গেল ইসিতে

আমার শরীর, আমার সম্পদ : ঐশ্বরিয়া রাই

হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস মেসেজ টেক্সটে রূপান্তর করবেন যেভাবে

আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি আর নয় : চরমোনাই পীর

১০

আফগানিস্তানের নাগরিকদের সব ইমিগ্রেশন আবেদন স্থগিত যুক্তরাষ্ট্রের

১১

শরীয়তপুরকে জাতীয় প্ল্যানের মধ্যে আনা উচিত : নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু

১২

নগর পরিচালন ও স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

১৩

আপ বাংলাদেশের এক নেতাকে অব্যাহতি

১৪

টেক্টর ঝড়ে বাংলাদেশের সামনে কঠিন লক্ষ্য

১৫

আইপিএলে দল পেলেন না অজি অধিনায়ক

১৬

ভুলেও সয়াবিন খাবেন না যে ৫ ধরনের ব্যক্তি 

১৭

গাজা নিয়ে ‘ভয়ংকর অভিযোগ’, অ্যামনেস্টির সতর্কবার্তা

১৮

জামায়াত নেতৃত্বাধীন ৮ দলের খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ ১ ডিসেম্বর

১৯

নির্বাচিত হলে সমৃদ্ধ হবে দাগনভূঞা ও সোনাগাজী : আব্দুল আউয়াল মিন্টু 

২০
X