কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নবজাতকের চিকিৎসায় অবহেলা, ক্ষতিপূরণ কেন নয় জানতে রুল

হাইকোর্ট। পুরোনো ছবি
হাইকোর্ট। পুরোনো ছবি

রাজধানীর ডেলটা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করা গিয়ে নবজাতকের হাত ভাঙার ঘটনায় পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে চিকিৎসায় অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার তদন্ত করে আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ আগস্ট) নবজাতকের বাবার করা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন বলে জানান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. শফিকুল ইসলাম (সোহেল)।

গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর ডেলটা হাসপাতাল ভর্তি হওয়া পাঁচ দিন বয়সী নবজাতকের চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে শিশুর পিতা মো. নুরের সাফাহ পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে হাইকোর্টে রিট করেন।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল নবজাতকের শারীরিক অসুস্থতার কারণের ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এ কে খাইরুল আনাম চৌধুরীর অধীনে ভর্তি করেন মিরপুরের বাসিন্দা নবজাতকের বাবা মো. নূরের সাফাহ্। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলার সময়ে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ নবজাতকের বাবার। বিষয়টি নিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শিশুর বাবা নূরের সাফাহ্ বলেন, গত ৩ এপ্রিল নবজাতকের বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি থাকায় ডেলটা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি ফটোথেরাপি দেওয়ার জন্য। ভর্তির পরপরই তারা জানায়, দীর্ঘসময় আনইন্টারাপ্টেডলি থেরাপি নেওয়ার জন্য তারা দুই থেকে তিনবার ব্রেস্ট ফিডিং করতে দেবে এবং বাকি সময় ব্রেস্ট পাম্প করে তাদের কাছে দিলে তারাই নিজ দায়িত্বে বাচ্চাকে খাইয়ে নেবে। চিকিৎসা চলাকালীন কেউ বাচ্চার কাছে যেতে পারবে না এবং দেখতে পারবে না। রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত মা ও বাচ্চার কাছে যেতে পারবে না।

তাদের নিয়মানুযায়ী, আমার স্ত্রী বাচ্চাকে রাত ১২টায় স্বাভাবিকভাবে খাইয়ে দিয়ে আসে। সকাল ৭টায় তারা পুনরায় তাকে খাওয়ানোর জন্য ডেকে নিয়ে গেলে আমার স্ত্রী অনেক চেষ্টা করেও খাওয়াতে পারেনি, কারণ বাচ্চা ঘুমাচ্ছিল এবং কোনোভাবেই ঘুম থেকে উঠছে না। কর্তব্যরত নার্স জানায় যে, ঘুম থেকে উঠলে খাওয়ানোর জন্য ডেকে দেবে। তখন সে আবারও ব্রেস্ট পাম্প করে তাদের নিকট খাওয়ানোর জন্য দিয়ে আসে।

তিনি বলেন, পরের দিন সকাল ১০টায় ডিউটি চিকিৎসক জানায় যে বাচ্চার বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এসেছে তাকে রিলিজ দিয়ে দেবে, আমরা যেন বিল ক্লিয়ার করে আসি। ১১টার দিকে তারা বাচ্চাকে তার মায়ের কাছে দিয়ে যায় এবং জানায় যে বাচ্চার ডান হাতে ক্যানোলা পরানোর কারণে ব্যথা আছে তাই এই হাত যেন কম নাড়ানো হয়। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো যে, তখনো বাচ্চা ঘুমাচ্ছিলো এবং ফুল বডি কাঁথা দিয়ে মোড়ানো ছিল। বাসায় নিয়ে আসার পর কাঁথা থেকে বের করে খাওয়ানোর চেষ্টা করার সময় দেখা যায় যে, বাচ্চার ডান হাত কনুইয়ের উপরে ভাঙা যেটা টাচ করলেই সে মারাত্মকভাবে কান্না করছে।

হাত ভাঙা থাকার ব্যাপারটি বুঝার সঙ্গে সঙ্গেই ১২টার সময় আমরা পুনরায় তাকে ডেলটা মেডিকেল কলেজের নেওনেটাল ওয়ার্ডে নিয়ে যাই যেখানে সে ভর্তি ছিল। তাদেরকে দেখানোর পর ডিউটি চিকিৎসক জানায়, সে নিজে চেক করে দিয়েছিল ডিসচার্জ করার আগে এবং তাদের দাবি আমরা বাসায় নেওয়ার পর টানাটানি করে হাত ভেঙে ফেলেছি। মনে হচ্ছিলো, মোবাইল কেনার মত কেনো চেক করে বাচ্চা নেইনি সেটা আমাদের অপরাধ- যোগ করেন নবজাতকের বাবা মো. নূরের সাফাহ্।

তিনি বলেন, এ পর্যায়ে তারা একটি এক্সরে করার অ্যাডভাইস দিয়ে আমাদের শ্যামলীর পঙ্গু হাসপাতালে যেতে বলে কারণ তাদের ওখানে এক্সরে করার উপায় নাকি নেই। এ পর্যায়ে আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়ে চলে আসি কারণ বাচ্চার ট্রিটমেন্ট আমাদের কাছে জরুরি ছিল। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ট্রিটমেন্ট চলাকালীন বাচ্চা ঘুমিয়েই ছিল এবং কোনোভাবেই তাকে খাওয়ানো যায়নি। সন্ধ্যার পরপরই বাচ্চা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে এবং খাওয়া শুরু করে। যেহেতু রাত ১২টায় ও বাচ্চা স্বাভাবিক ছিল এবং খাওয়াতে পেরেছে কিন্তু সকাল ৭টায় পুনরায় দেখার পর থেকে সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে তাতে আমাদের ধারণা রাতের কোনো এক সময়ে হাত ভেঙেছে এবং সেটা স্বাভাবিক দেখানোর জন্য তাকে কোনো ধরনের সিডেটিভ ব্যবহার করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল যেন আমরা না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২০২৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সরাসরি খেলার সম্ভাবনা কতটুকু?

আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ / বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় তরুণদের মূল্যায়ন কতটা জরুরি? 

রেলপথ অবরোধে আটকা ৮টি ট্রেন, ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়

পাকিস্তান সীমান্তে দুপক্ষের গোলাগুলি, ভারতীয় সেনা নিহত

জেসিকাকে ওরকার খেয়ে ফেলার দাবি ভুয়া, ভিডিওটি এআই নির্মিত

সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

আটক ৫ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

অবশেষে প্রকাশ্যে এলো ‘দেবী চৌধুরানী’র টিজার

আড়তে মেলে ইলিশ, পাতে ওঠে না সবার

নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা থাকবেন না আসিফ মাহমুদ

১০

বাস-ট্রাকের ভয়াবহ সংঘর্ষ

১১

শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে, যান চলাচল বন্ধ

১২

নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার এবার খেলবেন স্কটল্যান্ডের হয়ে

১৩

কিশোরগঞ্জে ২ কলেজের নাম পরিবর্তন

১৪

কেনিয়ার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতিতে শায়খ আহমাদুল্লাহর হৃদয়স্পর্শী স্ট্যাটাস

১৫

বিব্রতকর এক রেকর্ড নিজের করে নিলেন রশিদ

১৬

সিলেটের পাথর উদ্ধারে এবার অভিযানে নামছে দুদক

১৭

দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার দায়ে আসামির ১০ বছরের কারাদণ্ড

১৮

ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দিলেন মির্জা ফখরুল

১৯

৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি

২০
X