

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. কবিরের ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন সাত দিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির পুনরায় সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ।
রিমান্ড আবেদনে বলা, হাদির ঘটনায় গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আসামিকে বিস্তারিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি উল্লিখিত নাম-ঠিকানা প্রকাশসহ ঘটনার পূর্বপরিকল্পনা এবং ঘটনার পরবর্তীতে এজাহারনামীয় আসামিসহ অন্য আসামিদের আত্মগোপনে থাকতে সহযোগিতা করে মর্মে জানায়। এজাহারনামীয় আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আসামি রিমান্ডে থাকা অবস্থায় মামলা-সংক্রান্তে কিছু তথ্য প্রদান করলেও অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এড়িয়ে গিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নম্বর ঢাকা মেট্রো-ল-৫৪-৬৫৭৪ আসামির এনআইডির বিপরীতে কেনা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তারসহ উল্লিখিত কারণগুলো বিবেচনায় মামলা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিকে পুনরায় সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তবে এদিন আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিল না। শুনানি শেষে আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। পরে ১৬ ডিসেম্বর আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এখন পর্যন্ত এই মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শরীফ ওসমান হাদি অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তরা ১২ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তার মাথা ও ডান কানের নিচের অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম প্রাপ্ত হন।
পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টা মামলাটি করেন। পরে এটা হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়।
মন্তব্য করুন