অর্থ পাচার আইনের মামলায় রাজধানীর গুলশান থানার সাবেক উপপুলিশ পরিদর্শক ফিরোজ কবিরের ছয় বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১২ জুলাই) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তার স্ত্রী সাবরিনা আহমেদ ইভাকে চার বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামি ফিরোজ বরিশাল জেলার পুলিশ পরিদর্শকও ছিলেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম মিঠু বিষয়টি কালবেলাকে জানিয়েছেন।
এদিন জামিনে থাকা দুই আসামি আদালতে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১০ মার্চ আদালতে দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
রায়ের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি ফিরোজ কবিরকে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ছয় বছরের কারাদণ্ড ও অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ এক কোটি ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৮৮ টাকা দণ্ডিত করা হয়। আসামি সাবরিনা আহমেদ ইভাকে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আসামি ফিরোজ কর্তৃক অর্জিত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ৮৭ লাখ ১৭ হাজার ১৯৪ টাকা অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(৩) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলো। আসামি ফিরোজকে অর্থদণ্ডের টাকা ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ প্রদান করা হলো।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ফিরোজ কবির ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৩১ মে র্পযন্ত এবি ব্যাংক গুলশান শাখার, ডাচ বাংলা ব্যাংক, গুলশান শাখার, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের গুলশান শাখার, ইসলামী ব্যাংক, গুলশান শাখা, ব্র্যাক ব্যাংক, গুলশান শাখার চলতি হিসাবের এবং তার স্ত্রী সাবরিনা আহমেদ ইভার নামে পরিচালিত ডাচ বাংলা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সর্বমোট তিন কোটি নয় লাখ ৯৭ হাজার টাকা জমা করেন। তাদের ব্যাংক হিসাবে সমূহ পেশার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিপুল অঙ্কের লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। অধিকাংশ হিসাব খোলার সময় ফিরোজ কবির অর্থের উৎস চাকরি দেখিয়েছেন। কিন্তু যে ধরনের ও যে অঙ্কের লেনদেন হয়েছে তা বেতন-ভাতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। অর্থের উৎস সম্পর্কে অভিযুক্তরা কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা বা প্রমাণ দাখিলে ব্যর্থ হয়েছেন। এতে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় যে, জমাকৃত উক্ত অর্থ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুর্নীতি ও ঘুষসংক্রান্ত সম্পৃক্ত অপরাধলব্ধ।
মন্তব্য করুন