বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রিটেইল চেইনশপ স্বপ্নতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। প্রতারণার অভিযোগে এই চক্রের তিন সদস্যকে স্বপ্নর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিমের তথ্য অনুযায়ী ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এর উত্তরা পূর্ব থানার টিমের যৌথ চেষ্টায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম, মানি রিসিভসহ বেশি কিছু কাগজ জব্দ করা হয়।
২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) তাদের উত্তরার ৪নং সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন শাহীন রব্বানী, স্বপন দাস ও পারভেজ মোশারফ ।
থানার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি তালিকার ১নং বিবাদী শাহীন রব্বানী ড্রাগন শিল্ড সিকিউরিটি সলিউশন কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তার অধীনে অন্য আসামিরা চাকরি করতেন।
স্বপ্নতে প্রায় ৮ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময় প্রায়ই নতুন কর্মীর নিয়োগ করতে হয়। কিন্তু স্বপ্ন সবসময় তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং লিংকডিনের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে এই চক্র স্বপ্নের লোগো, আউটলেটের ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করে কর্মী নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে।
বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপর গত বুধবার (২৮ নভেম্বর) উত্তরা পূর্ব থানার সহযোগিতায় অপরাধীর অফিসে গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় । এ সময় অনেকে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করে। এ সময় সুজন পাল নামের এক চাকরিপ্রত্যাশী সেই অফিসে উপস্থিত ছিলেন। তার বাসা টাঙ্গাইল।
সুজন পাল বলেন, আমাকে স্বপ্নতে চাকরি দেওয়া এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর কথা বলে টাকা চাওয়া হয় । আমি কিছু টাকা দিয়েছি, এরপর আরও টাকা চাওয়া হয়। আমার মতো অনেকে অফিসে এসে টাকা প্রতিনিয়ত দিচ্ছে বলে জানতে পারি। সরল বিশ্বাসে চাকরির আশায় অনেকেই টাকাও দিয়েছি, তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত ।
স্বপ্নর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিমের প্রধান মাসুম বিল্লাহ বলেন, ২০১৯ সাল থেকে এই চক্রটি অনলাইনের মাধ্যমে উত্তরা হাউস বিল্ডিং, বাড্ডা নতুন বাজার, মোহাম্মদপুর ও সাভার এলাকায় স্বপ্নের লোগো ব্যবহার করে চাকরির ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। স্বপ্নে যোগদান করতে কোনো অর্থ নয় যোগ্যতা প্রয়োজন। উত্তরা পূর্ব থানার ডিসি, ওসি, এসিসহ পুরো টিমকে স্বপ্নের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুহিবুল্লাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি কৌশলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল বলে জানা যায় । গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি আমাদের থানা জানতে পারে, এরপর ঘটনাস্থলে অভিযুক্তদের তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আটক করা হয়। এ বিষয়ে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় বৃহস্পতিবার রাতে মামলা রুজু করা হয়।
মন্তব্য করুন