রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম শুক্রবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিল। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হচ্ছে।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৮৭-এ স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তা তার রাজনৈতিক মতামত প্রচার করতে পারবেন না এবং নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত করতে পারবেন না। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে শাবি শিক্ষক সাজেদুল করিমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম কালবেলাকে বলেন, আমি বিএনপির কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি কথাটি সত্য নয়। বিষয়টি কাকতালীয় ছিল। পারিবারিক একটি কাজে শুক্রবার ভোরে আমি ঢাকায় যাই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শান্তিনগর ও কাকরাইল মোড় ঘোরে অটোরিকশাযোগে যাওয়ার পথে মানুষের ভিড়ে অটোরিকশাটি আটকে যায়। পরে আমি গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওয়ানা হলে আমার কয়েকজন সহপাঠী ও সাবেক কলিগের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। ওই সময়ের ছবি তুলে কে বা কারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি বিএনপির সমাবেশস্থলে যাইনি। আমার উদ্দেশ্যও এমন ছিল না। কে বা কারা আমার ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এমন রটনা রটাচ্ছে। তাই আমি অনুরোধ করব আপনারা বিষয়টি যাচাই করে দেখুন, খুঁজে পাবেন সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা ঘটনা।
শাবি ভিসি অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, গণিত বিভাগের অধ্যাপক সাজেদুল করিম বিএনপির সমাবেশে গিয়েছেন বলে আমরা শুনেছি। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। রোববার এ বিষয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন : নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করতেই এই নাটক : আমান
তিনি জানান, প্রয়োজনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। তিনি জানান এ রকম ঘটনায় এর আগেও একজনকে শোকজ করা হয়েছিল।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এক দফা দাবির মহাসমাবেশে তিনি যোগ দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপক অভিযোগ করে বলেন, আইন সবার জন্য সমান। তিনি (অধ্যাপক সাজেদুল করিম) একজন শিক্ষক হিসেবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেন না। তিনি যা করেছেন তা স্পষ্টত চাকরির প্রতিশ্রুতি বা শর্ত লঙ্ঘন।
শাবি ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক সজিব আহমদ বলেন, সাজেদুল করিম স্যার যদি বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করে থাকেন, আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার প্রমাণ পায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থার অনুরোধ জানাব।
শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. চন্দ্রানী নাগ কালবেলাকে বলেন, আমি এখন আপনার কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি খুঁজ নিয়ে দেখতেছি।
মন্তব্য করুন