বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ১২তম ব্যাচের নবাগত (২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের) শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন রোববার (৩ সেপ্টেম্বর)। নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করতে নানা আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচ।
স্ব-উদ্যোগে ও বিভাগের সহযোগিতায় রং-তুলিতে রাঙানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো। করিডোর, ক্লাসরুমসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা রং-তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন তারা। এ যেন ক্যাম্পাসের তারার মেলায় ঈদের আনন্দ। বেলুন, পোড়ামাটির শিল্পকর্ম, রঙিন পোস্টার দিয়ে সাজানোসহ নানা কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ক্যাম্পাসের সিনিয়ররা। ক্যাম্পাস যেন এক মহা উৎসবে পরিণত হতে যাচ্ছে।
১১তম ব্যাচের এই ক্যাম্পাস নবরূপে সাজানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। তারাও বিভিন্নভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। রং-তুলির কাজকে সুন্দর করতে সরাসরি সহযোগিতা করছে ববিচাষ, বিউ ম্যাডোনা আর্টসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বরণ করে নিতে আমাদের সিনিয়রাও ক্যাম্পাস সাজিয়েছিলেন। ফুল দিয়ে বরণ করেছিলেন ,মিষ্টি মুখ করিয়েছিলেন, নাস্তার ব্যবস্থা করেছিলেন এমনকি উপহার দিয়েছিলেন। আমরা আমাদের জায়গা থেকে আরও একটু ভালো করে আয়োজন করার চেষ্টা করেছি। আমরা চাইব এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের পরবর্তী ব্যাচ আরও ভালো করে ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করবে।
আইন বিভাগের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম খান তামিম বলেন, সিনিয়রদের ধারাবাহিকতায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আইনবিষয়ক বিভিন্ন আইনি উক্তি, চিত্র দিয়ে তাদের বিভাগকে সাজানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আশা করছি নতুনদের কাছে ভালো লাগবে।
সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোশাহিদ আনসারী বলেন, জুনিয়রদের এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। তারা আমাদের বিভাগকে সাংবাদিকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে রং দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে এবং চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে। শিক্ষার্থীরা এটি দেখে নিজেদের মধ্যে এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করবে। বিভাগের কাছ থেকে একটা অন্যরকম অনুপ্রেরণাও পেতে পারে। লোকপ্রশাসন বিভাগ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ১১তম ব্যাচের এই কর্মকাণ্ডে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, জুনিয়ররা যা করছে সেটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তারা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রেখে নবীনদের বরণ করার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসকে নবরূপে রূপায়িত করছে এটা দেখে আমাদেরও ভালো লাগছে। দেখে মনে হয় ৫০ একরের এই ক্যাম্পাসটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। যারা নিজেদের অর্থায়নে এত কষ্ট করে ক্যাম্পাসটা সাজিয়েছে তাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশাবাদী। সেই সঙ্গে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য রইল এক রাশ গোলাপের শুভেচ্ছা। ১২তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হোক প্রাচ্যের ভেনিসের ৫০ একরের এই ববি ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ৫০ একরের ভালোবাসার প্রতীক নিয়ে শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বিভাগকে সুসজ্জিত করে রাঙিয়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম অবশ্যই প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকেও আমরা সব বিভাগকে নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বরণ করে নিব। যেটার তারিখ সময় করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এই বছর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগে ১৫২০টি আসন ছিল। রোববার বিভাগভিত্তিক ওরিয়েন্টেশন এবং পাঠদান শুরু হবে। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয়ভাবে নবীনবরণ আয়োজন করা হবে।
মন্তব্য করুন