গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বিজয় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অন্ত নেই। দীর্ঘদিন ধরে প্রভোস্ট ছাড়াই চলছে। ফলে হলের ওয়াশরুম থেকে শুরু করে হলের প্রাঙ্গণ, করিডোর, সিড়ি সব জায়গারই বেহাল । তা ছাড়াও হলটির ডাইনিং প্রায় এক বছর থেকে বন্ধ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সরব হয়ে নানাবিধ অভিযোগ করতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের কিছু কিছু ওয়াশরুম প্রায় এক মাস থেকে পরিষ্কার করা হয় না, কয়েক মাস ধরে হলের প্রভোস্ট নেই, দীর্ঘদিন ধরে হলের ডাইনিং বন্ধ, গতকাল থেকে হলের ইন্টারনেট ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন।
সরেজমিনে হলটি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, হলের বেশিরভাগ বাথরুম ও টয়লেট অপরিচ্ছন্ন। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করাই প্রায় সব ওয়াশরুমগুলোই দুর্গন্ধে ভরা। বেশ কিছু টয়লেটসহ গোছলখানায় নেই বৈদ্যুতিক বাতি। পরিচর্যার অভাবে যেখানে সেখানে ভেজা স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। হলের চারপাশ ঝোপঝাড়ে ভরা।
এ বিষয়ে হলের এক কর্মচারীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমি একাই যতটুকু পারি সাধ্যমত করার চেষ্টা করি। আমার সাথে আরেকজন কাজ করত, তাকে টাকার সংকটের কারণে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আর এত বড় হল আমার একার পক্ষে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার রাখা সম্ভবপর নয়। তবে খুব শিগগিরই আরও কাজের লোক নিয়োগ করা হবে বলে তাকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. আব্দুল গফফার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হল প্রভোস্ট না থাকায় আমরা অভিভাবকহীন এক পরিবারে বাস করছি। যার দরুণ আমরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। হলের ওয়াশরুম ব্যবহারের অনুপযোগী, চারপাশ অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন এক ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তা ছাড়া হলের চারপাশ ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে যার কারণে মশার উপদ্রব আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। যার দরুণ আমরা হলের শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বাস করছি।
বায়োমেট্রিক অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. ইমরান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশরুমগুলো পরিষ্কার না করানোই সেগুলো প্রায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ ওয়াশরুমের বাল্বগুলো নষ্ট। টয়লেটের কিছু কিছু ব্লক একেবারে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। যার ফলে আমরা খুবই ভোগান্তির মধ্যে আছি।
তিনি আরও বলেন, টাকার সংকটের কথা বলা হলে শিক্ষার্থীরা নিজেরা টাকা উঠিয়ে হলের ওয়াশরুম পরিষ্কারের সরঞ্জাম ক্রয় করে দেয় পরিচ্ছন্নকর্মীকে।
হলের সার্বিক সমস্যার কথা তুলে ধরে জানতে চাওয়া হলে হলের সহকারী প্রভোস্ট মো. জাহিদ হাসান বলেন, আমি কি প্রভোস্ট? এ বিষয়ে প্রভোস্টের কাছে এবং ভিসি দপ্তরে খোজ নাও।
এ বিষয়ে উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, আমরা সামনের সপ্তাহের সোমবারের মধ্যে প্রভোস্ট নিয়োগ দিয়ে দেব। আশা করি, সমস্যা থাকবে না।
মন্তব্য করুন