বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের ১৪তম ব্যাচের হাসানুর রহমান।মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সূত্রাপুর থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা করা হয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ভিক্টোরিয়া পার্কে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গ্রাম থেকে আমার বন্ধু ঢাকায় এসেছিল ব্যবসার মালামাল কেনার জন্য। গুলিস্তান থেকে মালামাল কেনা শেষ করে রাতে আমার বাসায় থাকবে। বাসায় এসে গরমে অস্বস্তি লাগার কারণে বাসা থেকে বের হয়ে আমি আর আমার এলাকার বন্ধু ভিক্টোরিয়া পার্কে বসে ছিলাম। আমার একটা কল আসার কারণে আমি পাশে গিয়ে কথা বলতেছিলাম। ওই সময়ে দেখি আমার বন্ধুর সঙ্গে কয়েকজন তর্কাতর্কি করছে। পরে আমি সেখানে গিয়ে দেখি তারা আমার বন্ধুকে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করছে। তাদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল তারা ওই সময় মদ খেয়ে এসেছে। যেহেতু আমার বন্ধু ঢাকায় এসেছে মালামাল কিনতে তার সাঙ্গে প্রায় ১৮ হাজার টাকা ছিল। কথা বলার একপর্যায়ে তারা আমার বন্ধুকে টাকা দিতে বলে। আমার বন্ধু বুঝতে পেরে তার সঙ্গে থাকা টাকাগুলো আমাকে দিয়ে দেয়। তারা টাকা আছে আমাদের কাছে বুঝে যায়। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আমি এবং আমার বন্ধুর কাছে ৫০০০ টাকা দাবি করে। কারণ জানতে চাইলে তারা বলে তোদের টাকা দিতে হবে, টাকা না দিলে এখান থেকে যেতে পারবি না।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমার বন্ধু এলাকা থেকে এসেছে, এখানে আমার সুনাম জড়িত। তাই তাদেরকে বুঝালাম যেন এমন কাজ না করে। তাহলে পরিবারের কাছে আমার সম্মান শেষ হয়ে যাবে। আমি অনেক রিকুয়েস্ট করতে গেলে আমাকেও মারার হুমকি দেয়। টাকা না দিতে চাইলে আমার বন্ধুর কলার ধরে। পরে বলে ১ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেব, তাড়াতাড়ি টাকা দে। পরে তারা আমাদের থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়।
ছিনতাইকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে ভুক্তভোগী হাসান বলেন, তারা ৫/৬ জন ছিল, সবগুলোই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করে। ফিলোসোফি ডিপার্টমেন্টের ১২ ব্যাচের মেহেদী, মিউজিক ডিপার্টমেন্টের ১৪ ব্যাচের কৌশক সরকার সাম্য আরও যারা ছিল তাদেরকে চিনতে পারিনি।
হাসান আরও বলেন, পরের দিন সকালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিয়ে আসি। প্রক্টর স্যার বিষয়টি দেখবেন বলেছেন এবং আমাকে থানায় অভিযোগ করতে বলেছেন। পরে আমি সূত্রাপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ করে আসি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা নেতারা বলেন, যাদের নাম বলা হয়েছে তারা কেউ ছাত্রলীগ করে না। তারা ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে এসব করে বেড়ায়। ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রমে তাদের সংযোগ নেই। এরা অপকর্মে জড়িত হয়ে ছাত্রলীগের নাম বলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীরা এসে অভিযোগ দিয়ে গেছে। যাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। বিষয়গুলো সবই একই রকম। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। তাদেরকে থানায় অভিযোগ করতে বলেছি, বিষয়টি যেন গুরুত্ব দেওয়া হয় আমি এ বিষয়ে থানায় কথা বলব।
অভিযোগের বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ওসি মো: মাসুদ আলম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা এর সঙ্গে জড়িত দেখা হবে।
মন্তব্য করুন