জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চার দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলমান আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কাকরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, জগন্নাথ কলেজকালীন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরবর্তী শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। এদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের এবং সাবেক রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
এসময় তারা দাবি জানিয়ে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর থেকে বৈষম্য এবং অবহেলার পাত্র হয়ে আসছে। কখনো হল নিয়ে, কখনো ক্যাম্পাস নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া যে কোনো জাতীয় আন্দোলনেও জগন্নাথ সবার আগেই নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু দেখা যায় তারাই দিনশেষে বঞ্চিত। তাদের যে তিন দাবি তা অত্যন্ত যৌক্তিক। এই দাবি অনতিবিলম্বে মেনে নেওয়া হোক। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অধিকতর মানবেতর জীবনযাপন থেকে এই সরকার তাদের মুক্তি দিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম নয়ন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ২০ বছর ধরে বঞ্চিত হয়ে এসেছে। আন্দোলন করে কোনো লাভ হয়নি। শিক্ষার্থীদের এই দাবি মেনে নেওয়া হোক।
এর আগে, বুধবার সারারাত কাকরাইল মোড়ে অবস্থান করে শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী প্রধান উপদেষ্টার বাস ভবন যমুনা অভিমুখে রওয়ানা হয়। পদযাত্রা প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে বাধার সম্মুখীন হয়। পরে মৎস্য ভবনে ফের পুলিশের বাধা অতিক্রম করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকে জবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে আসতেই অতর্কিত টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে পুলিশ। এতে প্রায় ৩০ এর অধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে জবির বাজেট বৃদ্ধি ও আবাসন সংকট নিরসন বিষয়ে আলোচনা হলেও দাবি মানা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ‘জবি ঐক্য’ লং মার্চের ঘোষণা দেয়।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো-
আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী পুলিশদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মন্তব্য করুন